কর্মফল
ছেলেও তো দেখি নি।

তোড়া কাড়িয়া লইয়া চপেটাঘাত করিয়া


লক্ষ্মীছাড়া কোথাকার! যা, এখান থেকে যা বলছি, যা।


হরেনের চিৎকারস্বরে ক্রন্দন, সতীশের সবেগে প্রস্থান
বিধুমুখীর ব্যস্ত হইয়া প্রবেশ


বিধু। সতীশ বুঝি হরেনকে কাঁদিয়েছে, দিদি টের পেলে সর্বনাশ হবে। হরেন,বাপ আমার, কাঁদিস নে, লক্ষ্মী আমার, সোনা আমার।

হরেন। (সরোদনে) দাদা আমাকে মেরেছে।

বিধু। আচ্ছা আচ্ছা, চুপ কর্, চুপ কর্। আমি দাদাকে খুব করে মারব এখন।

হরেন। দাদা ফুলের তোড়া কেড়ে নিয়ে গেল।

বিধু। আচ্ছা, সে আমি তার কাছ থেকে নিয়ে আসছি।

হরেনের ক্রন্দন



এমন ছিচ্‌কাঁদুনে ছেলেও তো আমি কখনো দেখি নি। দিদি আদর দিয়ে ছেলেটির মাথা খাচ্ছেন। যখন যেটি চায় তখনই সেটি তাকে দিতে হবে। দেখো-না, একবারে দোকান ঝাঁটিয়ে কাপড়ই কেনা হচ্ছে। যেন নবাবপুত্র
ছি ছি,নিজের ছেলেকে কি এমনি করেই মাটি করতে হয়। (সতর্জনে)

খোকা, চুপ কর্ বলছি। ঐ হামদোবুড়ো আসছে।


সুকুমারীর প্রবেশ


সুকুমারী। বিধু, ও কী ও! আমার ছেলেকে কি এমনি করেই ভূতের ভয় দেখাতে হয়। আমি চাকর-বাকরদের বারণ করে দিয়েছি, কেউ ওর কাছে ভূতের কথা বলতে সাহস করে না। আর তুমি বুঝি মাসি হয়ে ওর এই উপকার করতে বসেছ। কেন বিধু, আমার বাছা তোমার কী অপরাধ করেছে। ওকে তুমি দুটি চক্ষে দেখতে পার না, তা আমি বেশ বুঝেছি। আমি বরাবর তোমার ছেলেকে পেটের ছেলের মতো মানুষ করলেম, আর তুমি বুঝি আজ তারই শোধ নিতে এসেছ।

বিধু। (সরোদনে) দিদি, এমন কথা বোলো না। আমার কাছে আমার সতীশ আর তোমার হরেনে প্রভেদ কী আছে।

হরেন। মা, দাদা আমাকে মেরেছে।