সোনার তরী
        গলার মালা খুলিয়া লয়ে
            ধরিয়া দুটি করে 
     সোনার সুতে যতনে গাঁথা
            লিখনখানি পড়ে।
        পড়িল নাম, পড়িল ধাম,
            পড়িল লিপি তার,
        কোলের ‘পরে বিছায়ে দিয়ে
            পড়িল শতবার।
        শয়নশেষে রহিল বসে,
            ভাবিল রাজবালা—
        আপন ঘরে ঘুমায়েছিনু
            নিতান্ত নিরালা—
                  কে পরালে মালা!

 

        নূতন-জাগা কুঞ্জবনে
            কুহরি উঠে পিক,
        বসন্তের চুম্বনেতে
            বিবশ দশ দিক।
       বাতাস ঘরে প্রবেশ করে
            ব্যাকুল উচ্ছ্বাসে,
        নবীন ফুলমঞ্জরির
            গন্ধ লয়ে আসে।
        জাগিয়া উঠি বৈতালিক
            গাহিছে জয়গান,
        প্রাসাদদ্বারে ললিত স্বরে
            বাঁশিতে উঠে তান।
        শীতলছায়া নদীর পথে
            কলসে লয়ে বারি—
        কাঁকন বাজে, নূপুর বাজে—
            চলিছে পুরনারী।
        কাননপথে মর্মরিয়া
            কাঁপিছে গাছপালা,