গোঁফ এবং ডিম
ব্যাঘাত হইতেছে। আজ হইতে আমরা যদি গোঁফের শুশ্রূষা করি, গোঁফে অনবরত তা দিতে থাকি ও গোঁফ না কামাই, তবে তাহা হইতে না জানি কী শুভ ফলই প্রসূত হইবে! যেদিন ভারতবর্ষের বিংশতি কোটি লোক আকর্ণ-পূরিত গোঁফ নাপিতের ভীষণ আক্রমণ হইতে রক্ষা করিয়া রাখিবে, সেদিন ভারতবর্ষের কী শুভদিন! আমি যেন দিব্য চক্ষে দেখিতে পাইতেছি পূর্ব দিকের মেঘমালার অন্ধকার হইতে যেমন ধীরে ধীরে সূর্য উত্থান করিতে থাকেন, তেমনি ভারতবর্ষের বিংশতি কোটি সন্তানের গুম্ফমেঘের মধ্য হইতে ওই দেখো ভারতবর্ষের স্বাধীনতা-সূর্য ধীরে ধীরে উত্থান করিতেছে, ওই দেখো সিন্ধুনদ হইতে ব্রহ্মপুত্র ও হিমালয় হইতে কন্যাকুমারী পর্যন্ত আলোকিত হইয়া উঠিতেছে, যাজ্ঞবল্ক্য ও শাক্যসিংহের পবিত্র জন্মভূমিতে পুনরায় প্রভাত কিরণ বিস্তীর্ণ হইতেছে!’ (ঘন ঘন করতালি)।

হে আমি, হে গোঁফতত্ত্ববিৎ বুধঃ, তুমি আজ ধন্য হইলে! আজ তোমার গোঁফের কী গর্বের দিন! তাহারই নীড়জাত শাবকগুলি আজ কলকণ্ঠে গাহিতে গাহিতে তোমার মুখ দিয়া অনর্গল বাহির হইয়া আসিতেছে এবং সেই গোঁফ স্নেহভরে নতনেত্রে মুখের উপর ঝুঁকিয়া পড়িয়া সগর্বে মুখ হইতে উড্ডীন শাবকদিগের প্রতি চাহিয়া রহিয়াছে।

হে সমালোচকশ্রেষ্ঠ, তুমি যদি এই শাবকগুলি ধরিয়া তোমার খরশান কলম দিয়া জবাই কর ও লঙ্কা মরিচ দিয়া রন্ধন কর তবে তাহা নব্যশিক্ষিত পাঠকদের মুখরোচক হইবে সন্দেহ নাই, কিন্তু সে কাজটা কি হিন্দুসন্তানের মতো হইবে?