বনবাণী
তোমার বীথিকাতলে তার মুক্ত জীবনপ্রবাহ
আনন্দচঞ্চল গতি মিলায়েছে আপন উৎসাহ
পুষ্পিত উৎসাহে তব। হায়, আজি তব পত্রদোলে
সেদিনের স্পর্শ নাই। তাই এই বসন্তকল্লোলে,
পুর্ণিমার পূর্ণতায়, দেবতার অমৃতের দানে
মর্তের বেদনা মেশে।
 
                       চাহি আজ দূর-পানে
স্বপ্নচ্ছবি চোখে ভাসে —   ভাবী কোন্‌ ফাল্গুনের রাতে
দোলপূর্ণিমায়, সাজাতে আসিছে কারা পদ্মপাতে
পলাশ বকুল চাঁপা, আলিম্পনলেখা এঁকে দিতে
তব ছায়াবেদিকায়, বসন্তের আবাহনগীতে
প্রসন্ন করিতে তব পুষ্পবরিষন। সে উৎসবে
আজিকার এই দিন পথপ্রান্তে লুণ্ঠিত নীরবে।
কোলে তার পড়ে আছে এ রাত্রির উৎসবের ডালা।
আজিকার অর্ঘ্যে আছে যতগুলি সুরে-গাঁথা মালা,
কিছু তার শুকায়েছে, কিছু তার আছে অমলিন ;
দুয়েকটি তুলে নিল যাত্রীদল ; সে দিন এ দিন
দোঁহে দোঁহা-মুখ চেয়ে বদল করিয়া নিল মালা —
নূতনে ও পুরাতনে পূর্ণ হল বসন্তের পালা।