সন্ধ্যাসংগীত

                   হারাইয়া গেল সে কোথায়।

 

                   রাখো দেব, রাখো, মোরে রাখো,

                   তোমার স্নেহেতে মোরে ঢাকো

          আজি চারি দিকে মোর     এ কী অন্ধকার ঘোর,

                   একবার নাম ধরে ডাকো।

          পারি না যে সামালিতে,     কাঁদি গো আকুল চিতে ,

 

                    কত রব মৃত্তিকা বহিয়া।

          ধূলিময় দেহখানি             ধুলায় আনিছে টানি,

                   ধুলায় দিতেছে ঢাকি হিয়া।

 

                    হারায়েছি আমার আমারে,

                   আজি আমি ভ্রমি অন্ধকারে।

          কখনো বা সন্ধ্যাবেলা     আমার পুরানো সাথি

                   মুহূর্তের তরে আসে প্রাণে,

                   চারি দিকে নিরখে নয়ানে।

          প্রণয়ীর শ্মশানেতে             একেলা বিরলে আসি

                   প্রণয়ী যেমন কেঁদে যায়,

          নিজের সমাধি - ’পরে      নিজে বসি উপছায়া

                   যেমন নিশ্বাস ফেলে হায়,

          কুসুম শুকায়ে গেলে      যেমন সৌরভ তার

                   কাছে কাছে কাঁদিয়া বেড়ায়,

          সুখ ফুরাইয়া গেলে                 একটি মলিন হাসি

                   অধরে বসিয়া কেঁদে চায়,

          তেমনি সে আসে প্রাণে --         চায় চারি দিক - পানে,

                   কাঁদে, আর কেঁদে চলে যায়।

                   বলে শুধূ, “ কী ছিল, কী হল,

                   সে - সব কোথায় চলে গেল!”

 

                   বহুদিন দেখি নাই তারে,  

                   আসে নি এ হৃদয় - মাঝারে।