বনবাণী
মোর আঁখিপানে চেয়েছিল দুলি দুলি
      করুণ প্রশ্নরতা।
তার পরে কবে দাঁড়ালো যেদিন ভোরে
ফুলে ফুলে তার পরিচয়লিপি ধরে
নাম দিয়ে আমি নিলাম আপন ক'রে —
      মধুমঞ্জরিলতা।
 
তার পরে যবে চলে যাব অবশেষে
সকল ঋতুর অতীত নীরব দেশে,
তখনো জাগাবে বসন্ত ফিরে এসে
      ফুল-ফোটাবার ব্যথা।
বরষে বরষে সেদিনও তো বারে বারে
এমনি করিয়া শূন্য ঘরের দ্বারে
এই লতা মোর আনিবে কুসুমভারে
      ফাগুনের আকুলতা।
 
তব পানে মোর ছিল যে প্রাণের প্রীতি
ওর কিশলয়ে রূপ নেবে সেই স্মৃতি,
মধুর গন্ধে আভাসিবে নিতি নিতি
      সে মোর গোপন কথা।
অনেক কাহিনী যাবে যে সেদিন ভুলে,
স্মরণচিহ্ন কত যাবে উন্মূলে ;
মোর দেওয়া নাম লেখা থাক্‌ ওর ফুলে
      মধুমঞ্জরিলতা।