কণিকা
সারাদিন ঝিকিমিকি হাসে থেকে থেকে।
কহে, ওটা লক্ষ্মীছাড়া, চালচুলাহীন,
নিজেরে নিঃশেষ করি কোথায় বিলীন।
আমি দেখো চিরকাল থাকি জলভরা,
সারবান, সুগম্ভীর, নাই নড়াচড়া।
মেঘ কহে, ওহে বাপু, কোরো না গরব,
তোমার পূর্ণতা সে তো আমারি গৌরব।
স্পষ্টভাষী
বসন্ত এসেছে বনে, ফুল ওঠে ফুটি,
দিনরাত্রি গাহে পিক, নাহি তার ছুটি।
কাক বলে, অন্য কাজ নাহি পেলে খুঁজি,
বসন্তের চাটুগান শুরু হল বুঝি!
গান বন্ধ করি পিক উঁকি মারি কয়,
তুমি কোথা হতে এলে কে গো মহাশয়?
আমি কাক স্পষ্টভাষী, কাক ডাকি বলে।
পিক কয়, তুমি ধন্য, নমি পদতলে;
স্পষ্টভাষা তব কণ্ঠে থাক বারো মাস,
মোর থাক্ মিষ্টভাষা আর সত্যভাষ।
প্রতাপের তাপ
ভিজা কাঠ অশ্রুজলে ভাবে রাত্রিদিবা,
জ্বলন্ত কাঠের আহা দীপ্তি তেজ কিবা।
অন্ধকার কোণে পড়ে মরে ঈর্ষারোগে—
বলে, আমি হেন জ্যোতি পাব কী সুযোগে।
জ্বলন্ত অঙ্গার বলে, কাঁচা কাঠ ওগো,
চেষ্টাহীন বাসনায় বৃথা তুমি ভোগো।
আমরা পেয়েছি যাহা মরিয়া পুড়িয়া,
তোমারি হাতে কি তাহা আসিবে উড়িয়া?
ভিজা কাঠ বলে, বাবা, কে মরে আগুনে!
জ্বলন্ত অঙ্গার বলে, তবে খাক ঘুণে।