কাহিনী
কোথায় দূরে গেল সুরের খেলা,    কোথায় তাল গেল ভাসি,
গানের সুতা ছিঁড়ি পড়িল খসি    অশ্রুমুকুতার রাশি।
কোলের সখী তানপুরার'পরে    রাখিল লজ্জিত মাথা —
ভুলিল শেখা গান, পড়িল মনে    বাল্যক্রন্দনগাথা।
নয়ন ছলছল, প্রতাপ রায়    কর বুলায় তার দেহে —
‘ আইস হেথা হতে আমরা যাই '    কহিল সকরুণ স্নেহে।
শতেক - দীপ - জ্বালা নয়ন - ভরা    ছাড়ি সে উৎসবঘর
বাহিরে গেল দুটি প্রাচীন সখা    ধরিয়া দুঁহু দোঁহা - কর।
 
বরজ করজোড়ে কহিল, ‘ প্রভু,    মোদের সভা হল ভঙ্গ!
এখন আসিয়াছে নূতন লোক, ধরায় নব নব রঙ্গ!
জগতে আমাদের বিজন সভা,    কেবল তুমি আর আমি —
সেথায় আনিয়ো না নূতন শ্রোতা    মিনতি তব পদে স্বামী!
একাকী গায়কের নহে তো গান,    মিলিতে হবে দুইজনে —
গাহিবে একজন খুলিয়া গলা,    আরেক জন গাবে মনে ।
তটের বুকে লাগে জলের ঢেউ    তবে সে কলতান উঠে ,
বাতাসে বনসভা শিহরি কাঁপে    তবে সে মর্মর ফুটে।
জগতে যেথা যত রয়েছে ধ্বনি    যুগল মিলিয়াছে আগে —
যেখানে প্রেম নাই, বোবার সভা,    সেখানে গান নাহি জাগে। '