চণ্ডালিকা
                 তিনি ব’লে গেলেন আমায়–
                    নিজেরে নিন্দা কোরো না,
                 মানবের বংশ তোমার,
                    মানবের রক্ত তোমার নাড়ীতে।
                 ছি ছি মা, মিথ্যা নিন্দা রটাস নে নিজের,
                         সে-যে পাপ।
                 রাজার বংশে দাসী জন্মায় অসংখ্য,
                         আমি সে দাসী নই।
                 দ্বিজের বংশে চণ্ডাল কত আছে,
                         আমি নই চণ্ডালী॥ স্বরলিপি
            মা।  কী কথা বলিস তুই, আমি যে তোর ভাষা বুঝি নে।
                    তোর মুখে কে দিল এমন বাণী।
                 স্বপ্নে কি কেউ ভর করেছে তোকে
                         তোর গত জন্মের সাথি।
                    আমি যে তোর ভাষা বুঝি নে॥ স্বরলিপি
         প্রকৃতি।   এ নতুন জন্ম, নতুন জন্ম, নতুন জন্ম আমার। স্বরলিপি
                 সে দিন বাজল দুপুরের ঘণ্টা,  ঝাঁ ঝাঁ করে রোদ্‌দুর,
                 স্নান করাতেছিলেম কুয়োতলায় মা-মরা বাছুরটিকে।
                 সামনে এসে দাঁড়ালেন বৌদ্ধ ভিক্ষু আমার–
                 বললেন, ‘জল দাও, জাল দাও, জাল দাও।’ স্বরলিপি
                 শিউরে উঠল দেহ আমার, চমকে উঠল প্রাণ– স্বরলিপি
                         বল্‌ দেখি মা,
                 সারা নগরে কি কোথাও নেই জল!
                 কেন এলেন আমার কুয়োর ধারে,
                 আমাকে দিলেন সহসা
                    মানুষের তৃষ্ণা-মেটানো সম্মান॥ স্বরলিপি
                          –

                বলে   দাও জল, দাও জল, দাও জল।
                    দেব আমি কে দিয়েছে হেন সম্বল।
                      বলে   দাও জল।
                    কালো মেঘ-পানে চেয়ে
                       এল ধেয়ে