খেয়া

  আমি গেয়ে যাব আপন - মনে,

       যাবে না মুখ দেখা।

 

  জলের ধারা ঝরবে দ্বিগুণ বেগে,

       বাড়বে অন্ধকার—

  নদীর ধারে বনের সঙ্গে মেঘে

       ভেদ রবে না আর।

  কাঁসর ঘণ্টা দূরে দেউল হতে

       জলের শব্দে মিশে

  আঁধার পথে ঝোড়ো হাওয়ার স্রোতে

       ফিরবে দিশে দিশে।

  শিরীষফুলের গন্ধ থেকে থেকে

       আসবে জলের ছাঁটে,

  উচ্চরবে পাইক যাবে হেঁকে

       গ্রামের শূন্য বাটে।

  জলের ধারা ঝরবে বাঁশের বনে,

       বাড়বে অন্ধকার—

  গানের সাথে বাদলা রাতের সনে

       ভেদ রবে না আর।

 

  ও ঘর হতে যবে প্রদীপ জ্বেলে

         আনবে আচম্বিত

  সেতারখানি মাটির ’পরে ফেলে

         থামাব মোর গীত।

  হঠাৎ যদি মুখ ফিরিয়ে তবে

         চাহ আমার পানে

  এক নিমিষে হয়তো বুঝে লবে

         কী আছে মোর গানে।

  নামায়ে মুখ নয়ন করে নিচু

         বাহির হয়ে যাব,

  একলা ঘরে যদি কোনো - কিছু

         আপন - মনে ভাব।

  থামিয়ে গান আমি চলে গেলে

         যদি আচম্বিত

  বাদল - রাতে আঁধারে চোখ মেলে

         শোন আমার গীত।