পলাতকা

     পাহাড়গুলো মরে-যাওয়া শুঁয়োপোকার মতো,

                             নদীগুলো যত

অচল রেখার মিথ্যা কথায় অবাক হয়ে রইত থতমত,

                           সাগরগুলো ফাঁকা,

    দেশগুলো সব জীবনশূন্য কালো-আখর-আঁকা।

হাঁপিয়ে উঠত পরান আমার ধরণীর এই শিকল রেখার রূপে —

                              আমি চুপে চুপে

     মেঝের ' পরে বসে যেতেম ওই জানলার পাশে।

     ঐ যেখানে শুকনো জমি শুকনো শীর্ণ ঘাসে

     পড়ে আছে এলোথেলো, তাকিয়ে ওর ই পানে

     কার সাথে মোর মনের কথা চলত কানে কানে।

          ওই যেখানে ছাইয়ের গাদা আছে

বসুন্ধরা দাঁড়িয়ে হোথায় দেখা দিতেন এই ছেলেটির কাছে।

                   মাথার ' পরে উদার নীলাঞ্চল

                   সোনার আভায় করত ঝলমল।

সাত সমুদ্র তেরো নদীর সুদূর পারের বাণী

                   আমার কাছে দিতেন আনি।

               ম্যাপের সঙ্গে হত না তার মিল,

          বইয়ের সঙ্গে ঐক্য তাহার ছিল না এক তিল।

               তার চেহারা নয় তো অমন মস্ত ফাঁকা

                   আঁচড়-কাটা আখর-আঁকা —

               নয় সে তো কোন্‌ মাইল-মাপা বিশ্ব,

          অসীম যে তার দৃশ্য ; আবার অসীম সে অদৃশ্য।

 

 

               এখন আমার বয়স হল ষাট

                   গুরুতর কাজের ঝঞ্ঝাট।

               পাগল করে দিল পলিটিক্‌সে,

কোন্‌টা সত্য কোন্‌টা স্বপ্ন আজকে নাগাদ হয় নি জানা ঠিক সে ;

                  ইতিহাসের নজির টেনে সোজা

একটা দেশের ঘাড়ে চাপাই আরেক দেশের কর্মফলের বোঝা,

       সমাজ কোথায়   পড়ে থাকে, নিয়ে সমাজতত্ত্ব