কথা

পুত্র ছিল পাঠানের বয়স নবীন,

গোবিন্দ লইল তারে ডাকি। রাত্রিদিন

পালিতে লাগিল তারে সন্তানের মতো

চোখে চোখে। শাস্ত্র আর শস্ত্রবিদ্যা যত

আপনি শিখালো তারে। ছেলেটির সাথে

বৃদ্ধ সেই বীর গুরু সন্ধ্যায় প্রভাতে

খেলিত ছেলের মতো। ভক্তগণ দেখি

গুরুরে কহিল আসি, ‘ একি প্রভু, একি!

আমাদের শঙ্কা লাগে। ব্যাঘ্রশাবকেরে

যত যত্ন কর, তার স্বভাব কি ফেরে?

যখন সে বড়ো হবে তখন নখর,

গুরুদেব, মনে রেখো হবে সে প্রখর।'

গুরু কহে, ‘ তাই চাই, বাঘের বাচ্ছারে

বাঘ না করিনু যদি কী শিখানু তারে? '

 

 

বালক যুবক হল গোবিন্দের হাতে

দেখিতে দেখিতে। ছায়া - হেন ফিরে সাথে,

পুত্র - হেন করে তাঁর সেবা। ভালোবাসে

প্রাণের মতন — সদা জেগে থাকে পাশে

ডান হস্ত যেন। যুদ্ধে হয়ে গেছে গত

শিখগুরু গোবিন্দের পুত্র ছিল যত —

আজি তাঁর প্রৌঢ়কালে পাঠানতনয়

জুড়িয়া বসিল আসি শূন্য সে হৃদয়

গুরুজির। বাজে - পোড়া বটের কোটরে

বাহির হইতে বীজ পড়ি বায়ুভরে

বৃক্ষ হয়ে বেড়ে বেড়ে কবে ওঠে ঠেলি,

বৃদ্ধ বটে ঢেকে ফেলে ডালপালা মেলি।

 

 

একদা পাঠান কহে নমি গুরু - পায়,

‘ শিক্ষা মোর সারা হল চরণকৃপায়,