সোনার তরী

তাই তো কপাটে লাগাইয়া খিল

স্বর্গে মর্ত্যে খুঁজিতেছি মিল,

আনমনা যদি হই এক তিল

       অমনি সর্বনাশ। '

মনে মনে হাসি মুখ করি ভার

কহে কবিজায়া, ‘ পারি নেকো আর,

ঘর-সংসার গেল ছারেখার,

       সব তাতে পরিহাস। '

এতেক বলিয়া বাঁকায়ে মুখানি

শিঞ্জিত করি কাঁকন দুখানি

চঞ্চল করে অঞ্চল টানি

       রোষছলে যায় চলি।

হেরি সে ভুবন-গরব-দমন

অভিমানবেগে অধীর গমন,

উচাটন কবি কহিল, ‘ অমন

       যেয়ো না হৃদয় দলি।

ধরা নাহি দিলে ধরিব দু-পায়

কী করিতে হবে বলো সে উপায়,

ঘর ভরি দিব সোনায় রুপায় —

       বুদ্ধি জোগাও তুমি।

এতটুকু ফাঁকা যেখানে যা পাই

তোমার মুরতি সেখানে চাপাই,

বুদ্ধির চাষ কোনোখানে নাই —

            সমস্ত মরুভূমি। '

‘ হয়েছে, হয়েছে, এত ভালো নয় '

হাসিয়া রুষিয়া গৃহিণী ভনয়,

‘ যেমন বিনয় তেমনি প্রণয়

আমার কপালগুণে।

  কথার কখনো ঘটে নি অভাব,

যখনি বলেছি পেয়েছি জবাব ;

একবার ওগো বাক্য-নবাব,

         চলো দেখি কথা শুনে।