পরিশেষ

       টেনে টেনে বাহির করি এ খাতা ওই খাতা,

              উলটে মরি এ পাতা ওই পাতা।

       ভয়ের চোখে যতই দেখি লেখা,

মনে হয় যে রস কিছু নেই, রেখার পরে রেখা।

       গোপনে তার মুখের পানে চাহি,

বুদ্ধি সেথায় পাহারা দেয় একটু ক্ষমা নাহি।

নতুনকালের শান - দেওয়া তার ললাটখানি খরখড়্গ -সম,

       শীর্ণ যাহা, জীর্ণ যাহা তার প্রতি নির্মম।

              তীক্ষ্ণ সজাগ আঁখি,

       কটাক্ষে তার ধরা পড়ে কোথা যে কার ফাঁকি।

        সংসারেতে গর্তগুহা যেখানে-যা সবখানে দেয় উঁকি,

       অমিশ্র বাস্তবের সাথে নিত্য মুখোমুখি।

              তীব্র তাহার হাস্য

              বিশ্বকাজের মোহযুক্ত ভাষ্য।

 

একটু কেশে পড়া করলেম শুরু

যৌবনে বা শিখিয়েছিলেন অন্তর্যামী আবার কবিগুরু —

             প্রথম প্রেমের কথা,

      আপ্‌নাকে সেই জানে না যেই গভীর ব্যাকুলতা,

      সেই যে বিধুর তীব্রমধুর তরাসদোদুল বক্ষ দুরু দুরু,

      উড়ো পাখির ডানার মতো যুগল কালো ভুরু,

             নীরব চোখের ভাষা,

      এক নিমেষে উচ্ছলি দেয় চিরদিনের আশা,

      তাহারি সেই দ্বিধার ঘায়ে ব্যথায় কম্পমান

              দুটি-একটি গান।

 

এড়িয়ে-চলা জলধারার হাস্যমুখর কলকলোচ্ছ্বাস,

       পূজায়-স্তব্ধ শরৎপ্রাতের প্রশান্ত নিশ্বাস,

             বৈরাগিণী ধূসর সন্ধ্যা অস্তসাগরপারে,

       তন্দ্রাবিহীন চিরন্তনের শান্তিবাণী নিশীথ-অন্ধকারে,

ফাগুনরাতির স্পর্শমায়ায় অরণ্যতল পুষ্পরোমাঞ্চিত,

               কোন্‌ অদৃশ্য সুচিরবাঞ্ছিত