পূরবী
সেদিন আমি গেয়েছিলাম তোমার আগমনী;
দখিন বাতাস ফেলেছে শ্বাস রাতের আকাশ ঘেরি,
সেদিন আমি গেয়েছি গান তোমার বিরহেরি;
     ভোরের বেলায় অশ্রুভরা অধীর অভিমান
                 ভৈরবীতে জাগিয়েছিল গান।

 

এ গানগুলি তোমার বলে চিনবে কখনো কি?
            ক্ষতি কী তায়, নাই চিনিলে সখী!
তবু তোমায় গাইতে হবে নাই তাহে সংশয়,
তোমার কন্ঠে বাজবে তখন আমার পরিচয়—
যারে তুমি বাসবে ভালো, আমার গানের সুরে
বরণ করে নিতে হবে সেই তব বন্ধুরে।
     রোদন খুঁজে ফিরবে তোমার প্রাণের বেদনখানি,
              আমার গানে মিলবে তাহার বাণী।

 

তোমার ফাগুন উঠবে জেগে, ভরবে আমের বোলে,
            তখন আমি কোথায় যাব চলে।
পূর্ণ চাঁদের আসবে আসর, মুগ্ধ বসুন্ধরা,
বকুলবীথির ছায়াখানি মধুর মূর্ছাভরা—
হয়তো সেদিন বক্ষে তোমার মিলন-মালা গাঁথা,
হয়তো সেদিন ব্যর্থ আশায় সিক্ত চোখের পাতা—
     সেদিন আমি আসব না তো নিয়ে আমার দান,
                তোমার লাগি রেখে গেলেম গান।