৩৯

যেদিন উদিলে তুমি, বিশ্বকবি, দূর সিন্ধুপারে,

ইংলণ্ডে দিকপ্রান্ত পেয়েছিল সেদিন তোমারে

আপন বক্ষের কাছে, ভেবেছিল বুঝি তারি তুমি

কেবল আপন ধন ; উজ্জ্বল ললাট তব চুমি

রেখেছিল কিছুকাল অরণ্যশাখার বাহুজালে,

ঢেকেছিল কিছুকাল কুয়াশা-অঞ্চল-অন্তরালে

বনপুষ্প-বিকশিত তৃণঘন শিশির-উজ্জ্বল

পরীদের খেলার প্রাঙ্গণে। দ্বীপের নিকুঞ্জতল

তখনো ওঠে নি জেগে কবিসূর্য-বন্দনাসংগীতে।

তার পরে ধীরে ধীরে অনন্তের নিঃশব্দ ইঙ্গিতে

দিগন্তের কোল ছাড়ি শতাব্দীর প্রহরে প্রহরে

উঠিয়াছ দীপ্তজ্যোতি মধ্যাহ্নের গগনের'পরে ;

নিয়েছ আসন তব সকল দিকের কেন্দ্রদেশে

বিশ্বচিত্ত উদ্ভাসিয়া ; তাই হেরো যুগান্তর-শেষে

ভারতসমুদ্রতীরে কম্পমান শাখাপুঞ্জে আজি

নারিকেলকুঞ্জবনে জয়ধ্বনি উঠিতেছে বাজি।