সেঁজুতি

                             শূন্যপানে চক্ষু মেলি

                                       দীর্ঘশ্বাস ফেলি

                             দূরযাত্রী নাম নিল দেবতার,

                   তালা দিয়ে রুধিল দুয়ার।

          টেনে নিয়ে অনিচ্ছুক দেহটিরে

                             দাঁড়ালো বাহিরে।

               ঊর্ধ্বে কালো আকাশের ফাঁকা

           ঝাঁট দিয়ে চলে গেল বাদুড়ের পাখা।

                    যেন সে নির্মম

  অনিশ্চিত-পানে-ধাওয়া অদৃষ্টের প্রেতচ্ছায়াসম।

                             বৃদ্ধবট মন্দিরের ধারে,

                   অজগর-অন্ধকার গিলিয়াছে তারে।

                             সদ্য-মাটি-কাটা পুকুরের

                   পাড়ি-ধারে বাসা বাঁধা মজুরের

খেজুরের পাতা-ছাওয়া — ক্ষীণ আলো করে মিট্‌মিট্‌,

                   পাশে ভেঙে-পড়া পাঁজা। তলায় ছড়ানো তার   ইঁট।

                             রজনীর মসীলিপ্তিমাঝে

লুপ্তরেখা সংসারের ছবি — ধান-কাটা কাজে

                             সারাবেলা চাষীর ব্যস্ততা ;

                                       গলা-ধরাধরি কথা

                   মেয়েদের ; ছুটি-পাওয়া

                                          ছেলেদের ধেয়ে যাওয়া

                             হৈ হৈ রবে ; হাটবারে ভোরবেলা

                   বস্তা-বহা গোরুটাকে তাড়া দিয়ে ঠেলা ;

                                           আঁকড়িয়া মহিষের গলা

          ও পারে মাঠের পানে রাখাল ছেলের ভেসে চলা।

                   নিত্যজানা সংসারের প্রাণলীলা না উঠিতে ফুটে

                             যাত্রী লয়ে অন্ধকারে গাড়ি যায় ছুটে।