শেষের কবিতা

         ওগো বন্ধু,
       সেই ধাবমান কাল

 জড়ায়ে ধরিল মোরে ফেলি তার জাল–
        তুলে নিল দ্রুতরথে
দুঃসাহসী ভ্রমণের পথে
   তোমা হতে বহু দূরে।
   মনে হয়, অজস্র মৃত্যুরে
   পার হয়ে আসিলাম
আজি নবপ্রভাতের শিখরচূড়ায়–
   রথের চঞ্চল বেগ হাওয়ায় উড়ায়
   আমার পুরানো নাম।
    ফিরিবার পথ নাহি;
   দূর হতে যদি দেখ চাহি
    পারিবে না চিনিতে আমায়।
       হে বন্ধু, বিদায়।


কোনোদিন কর্মহীন পূর্ণ অবকাশে
          বসন্তবাতাসে
অতীতের তীর হতে যে রাত্রে বহিবে দীর্ঘশ্বাস,
      ঝরা বকুলের কান্না ব্যথিবে আকাশ,
সেই ক্ষণে খুঁজে দেখো– কিছু মোর পিছে রহিল সে
      তোমার প্রাণের প্রান্তে; বিস্মৃতিপ্রদোষে
           হয়তো দিবে সে জ্যোতি,
হয়তো ধরিবে কভু নাম-হারা স্বপ্নের মুরতি।
          তবু সে তো স্বপ্ন নয়,
   সব-চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়,
             সে আমার প্রেম।
          তারে আমি রাখিয়া এলেম
অপরিবর্তন অর্ঘ্য তোমার উদ্দেশে।
   পরিবর্তনের স্রোতে আমি যাই ভেসে
         কালের যাত্রায়।