সন্ধ্যাসংগীত

স্খলিত জড়িত বাণী, অবশ নয়ন,

আশা ও নিরাশা-পাকে ঘুরিছে হৃদয়,

ঘুরিছে চোখের ’পরে জগতসংসার!

এই প্রেম, এই বিষ, বজ্র-হতাশন

কবে রে পৃথিবী হতে যাবে দূর হয়ে!

আয় স্নেহ, আয় তোর স্নিগ্ধসুধা ঢালি

এ জ্বলন্ত বহ্নিরাশি দে রে নিবাইয়া!

অগ্নিময় বৃশ্চিকের আলিঙ্গন হতে,

সুধাসিক্ত কোলে তোর তুলে নে তুলে নে!

প্রেম-ধূমকেতু ওই উঠেছে আকাশে,

ঝলসি দিতেছে, হায়, যৌবনের আঁখি,

কোথা তুমি ধ্রুবতারা ওঠো একবার,

ঢালো এ জ্বলন্ত নেত্রে স্নিগ্ধ-মৃদু-জ্যোতি।

তুমি সুধা, তুমি ছায়া, তুমি জ্যোৎস্নাধারা,

তুমি স্রোতস্বিনী, তুমি উষার বাতাস,

তুমি হাসি, তুমি আশা, মৃদু অশ্রুজল,

এসো তুমি এ প্রেমেরে দাও নিভাইয়া।

একটি মালতী যার আছে এ সংসারে

সহস্র দামিনী তার ধূলিমুষ্টি নয়!

 

ক্রমশ হৃদয় মোর এল শান্ত হয়ে

যন্ত্রণা বিষাদে আসি হল পরিণত।

নিস্তরঙ্গ সরসীর প্রশান্ত হৃদয়ে

নিশীথের শান্ত বায়ু ভ্রমে গো যখন,

এত শান্ত এত মৃদু পদক্ষেপ তার

একটি চরণচিহ্ন পড়ে না সরসে,

তেমনি প্রশান্ত হৃদে প্রশান্ত বিষাদ

ফেলিতে লগিল ধীরে মৃদুল নিশ্বাস।

নিরখিয়া নিদারুণ ঝটিকার মাঝে

হাসিময় শান্ত সেই মালতী কুসুমে

ক্রমশ হৃদয় মোর এল শান্ত হয়ে।

কিন্তু হায় কে জানিত সেই হাসিময়