ডি প্রোফণ্ডিস্‌

সন্তানের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া কবি কি এক অনন্ত রাজ্যের মধ্যে গিয়া উপস্থিত হইয়াছেন! এই অনন্তমন্দিরে গিয়া তিনি কাহাকে দেখিতে পাইলেন? কী গান গাইয়া উঠিলেন? বৈদিক ঋষিরা যে গান গাইয়াছেন।

Hallowed be Thy name – Halleluiah! –

Infinite Ideality!

Immeasurable Reality!

Infinite Personality!

Hallowed be Thy name– Halleluiah!

We feel we are nothing– for all is Thou and in Thee ;

We feel we are something– that also has come from Thee;

We know we are nothing– but Thou wilt help us to be.

Hallowed be Thy name– Halleluiah! -

অনন্ত ভাব। অপরিমেয় সত্য। অপরিসীম পুরুষ। অনন্ত ভাব আমাদের হইতে অত্যন্ত দূরবর্তী। কিছুতেই তাহার কাছে যাইতে পারি না। অবশেষে সেই ভাব মাত্রকে যখন সত্য বলিয়া জানিলাম, তখন তিনি আমাদের আরো কাছে আসিলেন। কিন্তু তাঁহাকে কেবলমাত্র সত্য বলিয়া জানিয়া তৃপ্তি হয় না। কেবল মাত্র একটি অন্ধ কারণ, অন্ধ শক্তি, অন্ধ সত্য বলিয়া জানিলে সম্পূর্ণ জানা হয় না। যখন জানিলাম তিনি অসীম পুরুষ, তাঁহার নিজত্ব আছে, তখন তিনি আমাদের কাছে আসিলেন, তখন তাঁহাকে আমরা প্রীতি করিতে পারিলাম। তখন তাঁহাকে কহিলাম তোমার জয় হউক!

“We feel we are nothing – for all is Thou and in Thee” হা অতীতের কথা। যখন আমরা তোমার মধ্যে ছিলাম তখন আমরা অনুভব করিতাম না যে আমরা কিছু, সকলই তুমি। ইহাই আমাদের ভাব মাত্র। তোমার মধ্যে আমরা ভাব মাত্রে ছিলাম। অবশেষে তোমার কাছ হইতে যখন আসিলাম তখন অনুভব করিতে লাগিলাম ‘আমরা কিছু’। “We feel we are something – that also has come from Thee” ইহা বর্তমানের কথা, ইহাই আমাদের সত্য। এখন আমরা কিছু হইয়াছি, আমরা সত্য হইয়াছি। “We know we are nothing – but Thou wilt help us to be” ইহা ভবিষ্যতের কথা। আমরা জানি আমরা কিছুই নই –তুমি আমাদের ক্রমশই গঠিত করিয়া তুলিতেছ, আমাদের ব্যক্ত করিয়া তুলিতেছ! মৃত্যুর মধ্য দিয়া নূতন নূতন সত্য, নূতন নূতন জ্ঞান শিখাইয়া আমাদের পূর্ণ ব্যক্তি করিয়া তুলিতেছ। কোনো কালেই তাহা হইতে পারিব না, চিরকালই “Thou wilt help us to be”। অপূর্ণতা হইতে পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হইবার আনন্দ আমরা চিরকাল ভোগ করিব। তোমার জয় হউক। মর্ত জীবনেও এই ক্রমোন্নতির তুলনা মিলে। মনুষ্য প্রথমে এক মহা বাষ্পরাশির মধ্যে, সমস্ত জগতের আদিভূতের মধ্যে মিলিয়া ছিল। ক্রমে ক্রমে অল্পে অল্পে পৃথক্‌ হইয়া মনুষ্যরূপে জন্মগ্রহণ করিল। অবশেষে যতই সে বড়ো হইতে লাগিল, অভিজ্ঞতা লাভ করিতে লাগিল, ততই তাহার ব্যক্তিত্ব জন্মিতে লাগিল। এই ক্রম-অনুসারেই কবি ঈশ্বরকে প্রথমে অনন্ত ভাব, পরে অপরিমেয় সত্য ও তৎপরে অপরিসীম পুরুষ বলিয়াছেন। এইখানে কবিতা শেষ হইল। ইহার পরে আর কোথায় যাইবে? ইহাই চূড়ান্ত সীমা! যাঁহারা একটা দৈত্যকে পর্বত বলিলে, দৈত্যের যষ্টিকে শালবৃক্ষ কহিলে মহান্‌-ভাবে হাঁ করিয়া থাকেন, তাঁহারা যে এত বড় কবিতার মহান্‌ ভাব উপলব্ধি করিতে পারেন না ইহাই আশ্চর্য। বস্তুগত মহান্‌ ভাব পর্যন্তই বোধ করি তাঁহাদের কল্পনার সীমা, বস্তুর অতীত মহান্‌ ভাব তাঁহারা আয়ত্ত করিতে পারেন না। তাহা যদি পারিতেন তবে তাঁহারা এই ক্ষুদ্র কবিতাটিকে সমস্ত ‘Paradise Lost’ এর অপেক্ষা মহান্‌ বলিয়া বিবেচনা করিতেন।