শৈশবসঙ্গীত
ফুলের মধু লুটিতে গিয়ে
    কাঁটার ঘা খাস্‌ নে!
হেথায় বেলা, হোথায় চাঁপা,
    শেফালী হোথা ফুটিয়ে—
ওদের কাছে মনের ব্যথা
    বল্‌ রে মুখ ফুটিয়ে!
মির কহে, “হোথায় বেলা,
    হোথায় আছে নলিনী—
ওদের কাছে বলিব নাকো
    আজিও যাহা বলি নি!
মরমে যাহা গোপন আছে
    গোলাপে তাহা বলিব,
বলিতে যদি জ্বলিতে হয়
    কাঁটারি ঘায়ে জ্বলিব!”
বিষাদের গান কেন গো আজিকে?
    আজিকে প্রমোদরাতি!
হরষের গান গাও গো অশোক
    হরষে প্রমোদে মাতি!
সবাই কহিল, “গাও গো অশোক,
    গাও গো প্রমোদগান,
নাচিয়া উঠুক কুসুমকানন
    নাচিয়া উঠুক প্রাণ!”
কহিল অশোক, “হরষের গান
    গাহিতে বোলো না আর—
কেমনে গাহিব? হৃদয়বীণায়
    বাজিছে বিষাদ-তার।”
এতেক বলিয়া অশোক বালক
    বসিল ভূমির ‘পরে—
কে কোথায় সব গেল সে ভুলিয়া
    আপন ভাবনা-ভরে!