সে

পুপুদিদি হাততালি দিয়ে বলে উঠল, আঃ, সে কী মজাই হত!

অঙ্কে দিদি এবার একশোর মধ্যে সাড়ে তেরো মার্কা পেয়েছে।


স্বপ্ন দেখছি কি জেগে আছি বলতে পারি নে। জানি নে কত রাত। ঘর অন্ধকার, লণ্ঠনটা আছে বারান্দায়, দরজার বাইরে। একটা চামচিকে পোকার লোভে ঘুরপাক খেয়ে বেড়াচ্ছে, গয়ায় - পিণ্ডি - না - দেওয়া ভূতের মতো।

সে এসে হাঁক দিলে, দাদা, ঘুমচ্ছ নাকি।

বলেই ঘরে ঢুকে পড়ল। কালো কম্বলে সর্বাঙ্গ মোড়া।

জিগেস করলেম, এ কেমন সজ্জা তোমার।

বললে, আমার বরসজ্জা।

বরসজ্জা! বুঝিয়ে বলো।

কনে দেখতে যাচ্ছি।

জানি নে কেন, আমার যেন ঘুমে - ঘোলা বুদ্ধিতে ঠেকল যে, ঠিক হয়েছে, এই সজ্জাই উচিত। উৎসাহ দিয়ে বললুম, সেজেছ ভালো। তোমার ওরিজিন্যালিটি দেখে খুশি হলুম। একেবারে ক্লাসিকাল সাজ।

কী রকম।

ভূতনাথ যখন তাঁর তপস্বিনী কনেকে বর দিতে এলেন, তাঁর গায়ে ছিল হাতির চামড়া। তোমার এটা যেন ভালুকের চামড়া। নারদ দেখলে খুশি হতেন।

দাদা, সমজদার তুমি। এলেম এইজন্যেই তোমার কাছে এত রাত্তিরে।

কত রাত বলো দেখি।

দেড়টার বেশি হবে না।

কনে কি এখনই দেখা চাই।

হাঁ, এখনই।

শুনেই বলে উঠলেম, ভারি চমৎকার।

কী কারণে বলো তো।

কেন - যে এতদিন এই আইডিয়াটা মাথায় আসে নি তাই ভাবি। আপিসের বড়ো সাহেবের মুখ দেখা দিনের রোদ‍্দুরে, আর কনে দেখা মাঝরাত্তিরের অন্ধকারে।

দাদা, তোমার মুখের কথা যেন অমৃতসমান। একটা পৌরাণিক নজির দাও তো।

মহাদেব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন মহাকালীর দিকে অমাবস্যার ঘোর অন্ধকারে, এই কথাটা স্মরণ কোরো!

অহো, দাদা, তোমার কথায় আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। সাব্লাইম যাকে বলে। তা হলে আর কথা নেই।

কনেটি কে এবং আছেন কোথায়।

আমার বউদিদির ছোটো বোন, আছেন তাঁরই বাড়িতে।