কাহিনী
গান্ধারীর আবেদন

দুর্যোধন।     প্রণমি চরণে তাত!

ধৃতরাষ্ট্র।                   ওরে দুরাশয়,

অভীষ্ট হয়েছে সিদ্ধ?

দুর্যোধন।                   লভিয়াছি জয়।

ধৃতরাষ্ট্র।    এখন হয়েছ সুখী?

দুর্যোধন।                   হয়েছি বিজয়ী।

ধৃতরাষ্ট্র।    অখণ্ড রাজত্ব জিনি সুখ তোর কই

রে দুর্মতি?

দুর্যোধন।          সুখ চাহি নাই মহারাজ!

জয়, জয় চেয়েছিনু, জয়ী আমি আজ।

ক্ষুদ্র সুখে ভরে নাকো ক্ষত্রিয়ের ক্ষুধা

কুরুপতি — দীপ্তজ্বালা অগ্নিঢালা সুধা

জয়রস, ঈর্ষাসিন্ধুমন্থনসঞ্জাত,

সদ্য করিয়াছি পান ; সুখী নহি, তাত,

অদ্য আমি জয়ী। পিতঃ, সুখে ছিনু, যবে

একত্রে আছিনু বদ্ধ পাণ্ডবে কৌরবে,

কলঙ্ক যেমন থাকে শশাঙ্কের বুকে

কর্মহীন গর্বহীন দীপ্তিহীন সুখে।

সুখে ছিনু, পাণ্ডবের গাণ্ডীবটঙ্কারে

শঙ্কাকুল শত্রুদল আসিত না দ্বারে।

সুখে ছিনু, পাণ্ডবেরা জয়দৃপ্ত করে

ধরিত্রী দোহন করি' ভ্রাতৃপ্রীতিভরে

দিত অংশ তার — নিত্য নব ভোগসুখে

আছিনু নিশ্চিন্তচিত্তে অনন্ত কৌতুকে।

সুখে ছিনু, পাণ্ডবের জয়ধ্বনি যবে

হানিত কৌরবকর্ণ প্রতিধ্বনিরবে।

পাণ্ডবের যশোবিম্ব-প্রতিবিম্ব আসি

উজ্জ্বল অঙ্গুলি দিয়া দিত পরকাশি

মলিন কৌরবকক্ষ। সুখে ছিনু, পিতঃ,

আপনার সর্বতেজ করি নির্বাপিত