শেষরক্ষা

ইন্দুর প্রবেশ

 

ইন্দু। বাবা, তোমার হল?

নিবারণ। ও ইন্দু, তুই তো দেখলি নে — তোরা সেই যে বিনোদবাবুর লেখার এত প্রশংসা করিস, তিনি আজ এসেছিলেন।

ইন্দু। আমার তো খেয়েদেয়ে আর কাজ নেই, তোমার এখানে যত রাজ্যির অকেজো লোক এসে জোটে আর আমি আড়াল থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে তাদের দেখি! আচ্ছা বাবা, চন্দ্রবাবু বিনোদবাবু ছাড়া আর-একটি যে লোক এসেছিল — বদ্‌-চেহারা লক্ষ্মী-ছাড়ার মতো দেখতে, চোখে চশমা-পরা, সে কে?

নিবারণ। তুই যে বলছিলি আড়াল থেকে দেখিস নে? বদ্‌-চেহারা আবার কার দেখলি? বাবুটি তো দিব্যি ফুটফুটে কার্তিকের মতো দেখতে। তাঁর নামটি কী জিজ্ঞাসা করা হয় নি।

ইন্দু। তাকে আবার ভালো দেখতে হল? দিনে দিনে তোমার কী যে পছন্দ হচ্ছে বাবা! এখন নাইতে চলো। —

[ নিবারণের প্রস্থান

নাঃ, ওঁর নামটা জানতে হচ্ছে। নিশ্চয় ক্ষান্তদিদি বলতে পারবেন। — বাবা, শোনো শোনো।

নিবারণের পুনঃপ্রবেশ

ওরা তোমাকে বিনোদবাবুর একটা ফটোগ্রাফ দিয়ে গেল না?

নিবারণ। হাঁ, এতে তিন বন্ধুরই ছবি আছে।

ইন্দু। তাতে ক্ষতি নেই। ওটা আমাকে দাও-না, আমি দিদিকে দেখাব।

নিবারণ। ভেবেছিলুম, আমি নিজে দেখাব।

ইন্দু। না বাবা, আমি দেখাব, বেশ মজা হবে।

নিবারণ। এই নে মা, কিন্তু ওকে নিয়ে বেশি ঠাট্টা করিস নে।

ইন্দু। বাবা, আমার সঙ্গে চব্বিশ ঘণ্টা বাস করছে, আর যাই হোক ঠাট্টায় ওর আর বিপদের আশঙ্কা নেই।

[ নিবারণের প্রস্থান

ইন্দু। কমলদিদি, কমলদিদি।

কমলের প্রবেশ

 

কমল। কী ইন্দু?

ইন্দু। আর দেরি কোরো না।

কমল। কেন, কী করতে হবে বল্‌-না।

ইন্দু। এখন কাব্যশাস্ত্রমতে কমলকে বিকশিত হয়ে উঠতে হবে।

কমল। কেন বল্‌ তো।

ইন্দু। খড়্‌খড়ের ফাঁক দিয়ে যাঁর অরুণরেখার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল সেই দিনমণি উঠে পড়েছেন তোমার ভাগ্যগগনে।

কমল। তুই খবর পেলি কোথা থেকে?