রাজা ও রানী
চতুর্থ দৃশ্য
প্রাসাদ
বিক্রমদেব মন্ত্রী ও দেবদত্ত

বিক্রমদেব।  পলায়ন! রাজ্য ছেড়ে পলায়ন! এ রাজ্যেতে

যত সৈন্য, যত দুর্গ, যত কারাগার,

যত লোহার শৃঙ্খল আছে, সব দিয়ে

পারে না কি বাঁধিয়া রাখিতে দৃঢ়বলে

ক্ষুদ্র এক নারীর হৃদয়? এই রাজা?

এই কি মহিমা তার? বৃহৎ প্রতাপ,

লোকবল অর্থবল নিয়ে পড়ে থাকে

শূন্য স্বর্ণপিঞ্জরের মতো, ক্ষুদ্র পাখি

উড়ে চলে যায়।

     মন্ত্রী।                 হায় হায়, মহারাজ,

লোকনিন্দা, ভগ্নবাঁধ জলস্রোত সম,

ছুটে চারি দিক হতে।

বিক্রমদেব।                      চুপ করো মন্ত্রী!

লোকনিন্দা, লোকনিন্দা সদা! নিন্দাভারে

রসনা খসিয়া যাক অলস লোকের।

দিবা যদি গেল, উঠুক না চুপি চুপি

ক্ষুদ্র পঙ্ককুণ্ডু হতে দুষ্ট বাষ্পরাশি,

অমার আঁধার তাহে বাড়িবে না কিছু।

লোকনিন্দা!

  দেবদত্ত।                 মন্ত্রী, পরিপূর্ণ সূর্য-পানে

কে পারে তাকাতে? তাই গ্রহণের বেলা

ছুটে আসে যত মর্তলোক, দীননেত্রে

চেয়ে দেখে দুর্দিনের দিনপতি পানে,

আপনার কালিমাখা কাচখণ্ড দিয়ে

কালো দেখে গগনের আলো। মহারানী

মা-জননী, এই ছিল অদৃষ্টে তোমার?

তব নাম ধুলায় লুটায়? তব নাম