প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
চেয়ে সুখ শত গুণ। কিন্তু রাজরক্ত!
ছিছি! ভক্তিপিপাসিতা মাতা, তাঁরে বলো
রক্তপিপাসিনী!
রঘুপতি। বন্ধ হোক বলিদান
তবে!
জয়সিংহ। হোক বন্ধ! — না না, গুরুদেব, তুমি
জানো ভালোমন্দ। সরল ভক্তির বিধি
শাস্ত্রবিধি নহে। আপন আলোকে আঁখি
দেখিতে না পায়, আলোক আকাশ হতে
আসে। প্রভু, ক্ষমা করো, ক্ষমা করো দাসে।
ক্ষমা করো স্পর্ধা মূঢ়তার। ক্ষমা করো
নিতান্ত বেদনাবশে উদ্ভ্রান্ত প্রলাপ।
বলো প্রভু, সত্যই কি রাজরক্ত চান
মহাদেবী?
রঘুপতি। হায় বৎস, হায়! অবশেষে
অবিশ্বাস মোর প্রতি?
জয়সিংহ। অবিশ্বাস? কভু
নহে। তোমারে ছাড়িলে, বিশ্বাস আমার
দাঁড়াবে কোথায়? বাসুকির শিরশ্চ্যুত
বসুধার মতো, শূন্য হতে শূন্যে পাবে
লোপ। রাজরক্ত চায় তবে মহামায়া,
সে রক্ত আনিব আমি। দিব না ঘটিতে
ভ্রাতৃহত্যা।
রঘুপতি। দেবতার আজ্ঞা পাপ নহে।
জয়সিংহ। পুণ্য তবে, আমিই সে করিব অর্জন।
রঘুপতি। সত্য করে বলি, বৎস, তবে। তোরে আমি
ভালোবাসি প্রাণের অধিক — পালিয়াছি
শিশুকাল হতে তোরে, মায়ের অধিক
স্নেহে — তোরে আমি নারিব হারাতে।
জয়সিংহ। মোর
স্নেহে ঘটিতে দিব না পাপ, অভিশাপ
আনিব না এ স্নেহের 'পরে।