রাজা ও রানী
তৃতীয় দৃশ্য
কাশ্মীর
যুবরাজের প্রাসাদ
কুমারসেন ও ছদ্মবেশী সুমিত্রা

কুমারসেন। কত-যে আগ্রহ মোর কেমনে দেখাব

তোমারে ভগিনী! আমারে ব্যথিছে যেন

প্রত্যেক নিমেষ পল— যেতে চাই আমি

এখনি লইয়া সৈন্য, দুর্বিনীত সেই

দস্যুদের করিতে দমন, কাশ্মীরের

কলঙ্ক করিতে দূর। কিন্তু পিতৃব্যের

পাই নে আদেশ। ছদ্মবেশ দূর করো

বোন! চলো মোরা যাই দোঁহে — পড়ি গিয়ে

রাজার চরণে।

    সুমিত্রা।                  সে কী কথা, ভাই! আমি

এসেছি তোমার কাছে, জানাতে তোমারে

ভগিনীর মনোব্যথা। আমি কি এসেছি

জালন্ধর রাজ্য হতে ভিখারিনী রানী

ভিক্ষা মাগিবার তরে কাশ্মীরের কাছে?

ছদ্মবেশ দহিছে হৃদয়। আপনার

পিতৃগৃহে আসিলাম এতদিন পরে

আপনারে করিয়া গোপন! কতবার

বৃদ্ধ শংকরের কাছে কণ্ঠ রুদ্ধ হল

অশ্রুভরে — কতবার মনে করেছিনু

কাঁদিয়া তাহারে বলি, ‘ শংকর, শংকর,

তোদের সুমিত্রা সেই ফিরিয়া এসেছে

দেখিতে তোদের। ' হায়, বৃদ্ধ, কত অশ্রু

ফেলে গিয়েছিনু সেই বিদায়ের দিনে,

মিলনের অশ্রুজল নারিলাম দিতে।

শুধু আমি নহি আর কন্যা কাশ্মীরের

আজ আমি জালন্ধর-রানী।