আর্যগাথা

সে কে? – বিনা দোষে ক্ষমা চাই যার ; অপমান নাই

শতবার পা দুখানি ছুঁয়ে ;

সে কে? – মধুর দাসত্ব যার, লীলাময় কারাগার ;

শৃঙ্খল নূপুর হয়ে বাজে ;

সে কে? – হৃদয় খুঁজিতে গিয়া নিজে যাই হারাইয়া

যার হৃদি - প্রহেলিকা মাঝে।

ইহা কবিতা, কিন্তু গান নহে। সুরসংযোগে গাহিলেও ইহাকে গান বলিতে পারি না। ইহাতে ভাব আছে এবং ভাবপ্রকাশের নৈপুণ্যও আছে কিন্তু ভাবের সেই স্বত-উচ্ছ্বসিত সদ্য-উৎসারিত আবেগ নাই যাহা পাঠকের হৃদয়ের মধ্যে প্রহত তন্ত্রীর ন্যায় একটা সংগীতময় কম্পন উৎপাদন করিয়া তোলে।

ছিল বসি সে কুসুমকাননে।
আর অমল অরুণ উজল আভা
ভাসিতেছিল সে আননে।
ছিল এলায়ে সে কেশরাশি (ছায়াসম হে);
ছিল ললাটে দিব্য আলোক, শান্তি
অতুল গরিমারাশি।
সেথা ছিল না বিষাদভাষা (অশ্রুভরা গো);
সেথা বাঁধা ছিল শুধু সুখের স্মৃতি
হাসি, হরষ, আশা;
সেথা ঘুমায়ে ছিল রে পুণ্য, প্রীতি,
প্রাণভরা ভালোবাসা।
তার সরল সুঠাম দেহ (প্রভাময় গো, প্রাণভরা গো);
যেন যা-কিছু কোমল ললিত তা দিয়ে
রচিয়াছে তাহে কেহ;
পরে সৃজিল সেথায় স্বপন, সংগীত,
সোহাগ শরম স্নেহ।
যেন পাইল রে উষা প্রাণ (আলোময়ী রে);
যেন জীবন্ত কুসুম, কনকভাতি
সুমিলিত, সমতান।
যেন সজীব সুরভি মধুর মলয়
কোকিলকূজিত গান।
শুধু চাহিল সে মোর পানে (একবার গো);
যেন বাজিল বীণা মুরজ মুরলী