অরূপরতন
ফাগুন আসে ফিরে ফিরে দখিন বায়ে,
নতুন সুরে গান উড়ে যায় আকাশ পারে,
নতুন রঙে ফুল ফোটে তাই ভারে ভারে॥


কৌণ্ডিল্য। তা তুমি নতুন হয়েই রইলে সে-কথা সত্যি, বুড়ো হবার সময় পেলে না।

ঠাকুরদা। নিজে নতুন না হলে সেই নতুনকে যে পাই নে।


গান
ওগো আমার নিত্য নূতন দাঁড়াও হেসে
চলব তোমার নিমন্ত্রণে নবীন বেশে।
দিনের শেষে নিবল যখন পথের আলো,
সাগরতীরে যাত্রা আমার যেই ফুরাল,
তোমার বাঁশি বাজে সাঁঝের অন্ধকারে
শূন্যে আমার উঠল তারা সারে সারে॥


কৌণ্ডিল্য। রাখো দাদা, তোমার গান রাখো। আজকের দিনে একটা কথা মনে বড়ো লাগছে।

ঠাকুরদা। কী বলো দেখি।

কৌণ্ডিল্য। এবার দেশবিদেশের লোক এসেছে, সবাই বলছে সবই দেখেছি ভালো কিন্তু রাজা দেখি নে কেন — কাউকে জবাব দিতে পারি নে। এখানে ঐটে বড়ো একটা ফাঁকা রয়ে গেছে।

ঠাকুরদা। ফাঁকা! আমাদের এই দেশে রাজা এক জায়গায় দেখা দেয় না বলেই তো সমস্ত রাজ্যটা এবেবারে রাজায় ঠাসা হয়ে রয়েছে — তাকে বল ফাঁকা! সে যে আমাদের সবাইকেই রাজা করে দিয়েছে।

গান
আমরা    সবাই  রাজা  আমাদের  এই
                                   রাজার  রাজত্বে।
           নইলে  মোদের  রাজার  সনে
                                   মিলব  কী  স্বত্বে॥
           আমরা  যা  খুশি  তাই  করি
           তবু   তাঁর  খুশিতেই  চরি,
আমরা    নই  বাঁধা  নই  দাসের  রাজার
                                   ত্রাসের  দাসত্বে।
           নইলে  মোদের  রাজার  সনে
                                   মিলব  কী  স্বত্বে।
           রাজা   সবারে  দেন  মান
           সে  মান   আপনি  ফিরে  পান,
মোদের    খাটো  করে  রাখে  নি  কেউ