উত্তর-প্রত্যুত্তর

শুনাইতে মানবি স্বপন স্বরূপ॥

      ...

শাখা-শিখর সুধাকর পাঁতি।

তাহে নব পল্লবে অরুণক ভাতি॥

      ...

তা পর চঞ্চল খঞ্জন যোড়।

তা পর সাপিনী ঝাঁপল মোড়॥’

২০-সংখ্যক গীত

প্রবন্ধ-লেখক ইহার মধ্যস্থ দুই চরণের এই অর্থ দিয়াছেন। ‘সে তমাল তরুর শাখা শিখর অর্থাৎ মুখ, সুধাকর। লাবণ্যই বোধ করি অরুণ ভাতির পল্লবে।’ পাঁতি শব্দটি কোথায় গেল? ‘লাবণ্যই বোধ করি—’ ইত্যাদি এই ছত্রের অর্থ আমরা বুঝিতে পারিলাম না।

শ্রীযোঃ

প্রত্যুত্তর—‘বোধ করি’ শব্দ ব্যবহার করিবার তাৎপর্য এই যে, যেখানে অর্থ বোধে মনে কোনো প্রকার সন্দেহ থাকে সেখানে আমি অসংকুচিত ও অসন্দিগ্ধ ভাব দেখাইতে পারি না। এ অপরাধের যদি কোনো শাস্তি থাকে, তবে তাহা বহন করিতে রাজি আছি।

শ্রীরঃ

উত্তর—আর ‘হাস্য স্থির বাস করে’ কিরূপ বাংলা? শ্রীকৃষ্ণের কুন্তল সাপিনীর ন্যায়ই বা কি প্রকারে হইল? শ্রীকৃষ্ণের চূড়ার কথাই শুনিয়াছি। আমরা যে ব্যক্তির নিকট এই গীতটির ব্যাখ্যা শুনিয়াছি তিনি ইহার আদিরস-ঘটিত ব্যাখ্যা করিয়াছিলেন। সম্ভবত সেইজন্যই ইহার অর্থ করেন নাই।

শ্রীযোঃ

প্রত্যুত্তর—শ্রীকৃষ্ণের শরীর বর্ণনা করা ভিন্ন অন্য কোনো প্রকার গূঢ় আদিরস ঘটিত অর্থ বুঝানো কবির অভিপ্রেত ছিল, তাহা আমি কোনো মতেই বিশ্বাস করিতে পারি না। ‘চঞ্চল খঞ্জন’ ‘যুগল বিম্বফল’ প্রভৃতি শব্দ প্রয়োগ দেখিয়া রূপ-বর্ণনা বলিয়াই স্পষ্ট অনুমান হইতেছে।

শ্রীরঃ

উত্তর—

‘গগন সঘন, মহী পঙ্কা

বিঘিনি বিথারিত ইত্যাদি।’

এই পদে দুই-একটি ছাপার ভুল আছে। ‘ভুললি’ স্থানে ‘ভুলালি’ ও ‘মানবি’ স্থানে ‘মানব’ হইবে। তাহা হইলেই সম্পাদকের অর্থ থাকিয়া যাইবে। আশ্চর্যের বিষয়, যে, প্রবন্ধ-লেখক একটু চিন্তা করিয়া দেখেন নাই, সম্পাদক এ অর্থ দিলেন কেন। একেবারে সম্পাদকের অর্থকে ভুল বলিয়াছেন; ইহাতে তাঁহার কতদূর বিজ্ঞতার পরিচয় প্রদান করা হইয়াছে, তাহা তিনিই বিবেচনা করুন।

শ্রীযোঃ