দিনরাত্রি যেত কোথায় দিয়ে।
বন্ধুরা সব বলত, “ করছ কী এ।
মারা যাবে শেষে! ”
আমি বলতেম হেসে,
“ কী করি ভাই, খাটতে কি হয় সাধে।
একটু যদি ঢিল দিয়েছি অমনি গলদ বাধে,
কাজ বেড়ে যায় আরো —
কী করি তার উপায় বলতে পারো?”
বিশ্বকর্মার সদর আপিস ছিল যেন আমার ‘ পরেই ন্যস্ত,
অহোরাত্রি এমনি আমার ভাবটা ব্যতিব্যস্ত।
সেদিন তখন দু-তিন রাত্রি ধরে
গত সনের রিপোর্টখানা লিখেছি খুব জোরে।
বাছাই হবে নতুন সনের সেক্রেটারি,
হপ্তা তিনেক মরতে হবে ভোট কুড়োতে তারই।
শীতের দিনে যেমন পত্রভার
খসিয়ে ফেলে গাছগুলো সব কেবল শাখা-সার,
আমার হল তেমনি দশা ;
সকাল হতে সন্ধ্যা-নাগাদ এক টেবিলেই বসা ;
কেবল পত্র রওনা করা,
কেবল শুকিয়ে মরা।
খবর আসে “ খাবার তৈরি ”, নিই নে কথা কানে,
আবার যদি খবর আনে,
বলি ক্রোধের ভরে
“ মরি এমন নেই অবসর, খাওয়া তো থাক্ পরে। ”
বেলা যখন আড়াইটে প্রায়, নিঝুম হল পাড়া,
আর-সকলে স্তব্ধ কেবল গোটাপাঁচেক চড়ুই পাখি ছাড়া ;
এমন সময় বেহারাটা ডাকের পত্র নিয়ে
হাতে গেল দিয়ে।