যতটা শিখেছিলেম ভুলেছি তার দেড়গুণ ওজনে। নয়া - চাণক্য জগতের হিতের জন্যে যে উপদেশ দিয়েছেন সেটাও তোমার জানা দরকার দাদা, ছন্দ মিলিয়েই লেখা : তখন হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচি যখন পণ্ডিত চুপায়তে। — চললুম। আমার শেষ পরামর্শ এই, বৈজ্ঞানিক রসিকতা ছেড়ে দিয়ে ছেলেমানুষি করো যতটা পার।
এই কাহিনীটা পুপেদিদির কাছে একটুও পছন্দসই হয় নি। কপাল কুঁচকে বললে, এ কখনো হয়? নস্যি নিয়ে পেট ভরে?
আমি বললেম, গোড়াতে পেটটাকেই যে সরিয়ে দিয়েছে।
পুপুদিদি আশ্বস্ত হয়ে বললে, ওঃ, তাই বুঝি।
শেষ পর্যন্ত ওর গিয়ে ঠেকল কথা না বলাতে। ওর প্রশ্ন, কথা না বলে কি বাঁচা যায়।
আমি বললুম, ওদের সব চেয়ে বড়ো পণ্ডিত ভূর্জপাতায় লিখে লিখে দ্বীপময় প্রচার করেছেন, কথা বলেই মানুষ মরে। তিনি সংখ্যাগণনায় প্রমাণ করে দিয়েছেন, যারা কথা বলত সবাই মরেছে।
হঠাৎ পুপুদিদির বুদ্ধিতে প্রশ্ন উঠল, আচ্ছা, বোবারা?
আমি বললেম, তারা কথা বলে মরে নি, তারা মরেছে কেউ বা পেটের অসুখে, কেউ বা কাশিসর্দিতে।
শুনে পুপুদিদির মনে হল, কথাটা যুক্তিসংগত।
আচ্ছা, দাদামশায়, তোমার কী মত।
আমি বললুম, কেউ বা মরে কথা বলে, কেউ বা মরে না বলে।
আচ্ছা, তুমি কী চাও।
আমি ভাবছি, হুঁহাউ দ্বীপে গিয়ে বাস করব, জম্বুদ্বীপে বকিয়ে মারল আমাকে, আর পেরে উঠছি নে।
শিবা-শোধন-সমিতির একটা রিপোর্ট পাঠিয়েছে আমাদের সে। পুপুদিদির আসরে আজ সন্ধেবেলায় সেইটে পাঠ হবে।
জিজ্ঞাসা করলেম, কী করতে হবে শুনি।
শেয়াল বললে, নাহয় হলুম পশু, তাই বলে কি উদ্ধার নেই। পণ করেছি, তোমার হাতে মানুষ হব।
শুনে মনে ভাবলুম, সৎকার্য বটে।
জিজ্ঞাসা করলুম, তোমার এমন মতলব হল কেন।
সে বললে, যদি মানুষ হতে পারি তা হলে শেয়াল - সমাজে আমার নাম হবে, আমাকে পুজো করবে ওরা।
আমি বললুম, বেশ কথা।
বন্ধুদের খবর দেওয়া গেল। তারা খুব খুশি। বললে, একটা কাজের মতো কাজ বটে। পৃথিবীর উপকার হবে। ক'জনে