চেহারায় তোমার বউদিদির সঙ্গে কি মেলে।
মেলে বৈকি, সহোদরা বটে।
তা হলে অন্ধকার রাতের দরকার আছে।
বউদি স্বয়ং বলে দিয়েছেন, টর্চটা যেন সঙ্গে না আনি।
বউদির ঠিকানাটা?
সাতাশ মাইল দূরে, চৌচাকলা গ্রামে, উনকুণ্ড পাড়ায়।
ভোজন আছে তো?
আছে বৈকি।
শুনে কোন্ মোহের ঘোরে যে মনটা পুলকিত হল বলতে পারি নে। লিভরের দোষে ভুগে আসছি বারো বছর, খাবার নাম শুনলেই পিত্তি যায় বিগড়ে।
জিগেস করলেম, খাওয়াটা কী রকম হবে শুনি।
অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল, অতি উত্তম, অতি উত্তম অতি উত্তম। বউদি আমসত্ত দিয়ে উচ্ছেসিদ্ধ চমৎকার রাঁধে, আর কুলের আঁটি ঢেঁকিতে কুটে তার সঙ্গে দোক্তার জল মিশিয়ে চাটনি —
বলেই নাচ জুড়ে দিল বিলিতি চালে, — টিটিটম্টম্, টিটিটম্টম্, টিটিটম্টম্।
জীবনে কোনোদিন নাচি নি, হঠাৎ নাচ পেয়ে গেল — দুজনে হাত ধরাধরি করে নাচতে শুরু করে দিলুম; টিটিটম্টম্। মনে হল আশ্চর্য আমার ক্ষমতা ; যমুনা দিদি যদি দেখত তবে বলত, নাচ বটে।
শেষকালে হাঁপিয়ে উঠে ধপ্ করে বসে পড়লুম। বললুম, আহারের ফর্দ যা দিলে একেবারে খাঁটি ভিটামিন। লিভরের পক্ষে অমৃত। কনে দেখতে যাবে তো কনের পরীক্ষা তো চাই।
এক দফা হয়ে গেছে আগেই।
কী রকম।
মনে করলুম, মিলন হবার আগে মিলের পরীক্ষা চাই। ঠিক কি না বলো।
ঠিক তো বটেই। পরীক্ষার প্রণালীটা কী।
জিগেস করা চাই ‘শোলোক মেলাতে পার কি না'। দূত পাঠিয়েছিলুম ‘রংমশাল' - এর সহ - সম্পাদককে, তিনি আওড়ালেন —
সুন্দরী, তুমি কালো কৃষ্টি।
বললেন মিল করে এর জবাব দিতে হবে, পুরো মাপের মিল।
কনেটি এক নিঃশেষে বলে দিলে —
কানা তুমি, নেই ভালো দৃষ্টি।
সহ - সম্পাদকের এটা অসহ হল, বলে দিলে —
ব্রহ্মা লম্বা হাতে
তোমাকে গড়েছে রাতে
যবে শেষ হল আলোবৃষ্টি।