দাদা, একেবারে বাদশাহি থামা থেমেছিলুম, আর কিছুতেই থামছি নে। মারধোর যদি কর সেও লাগবে ভালো। আস্ত কিলের যোগ্য পিঠ নেই যখন জানতে পারলুম, তখন সাতকড়ি পণ্ডিতমশায়ের কথা মনে করে বুক ফেটে যেতে চাইল, কিন্তু বুক নেই তো ফাটবে কী। কই-মাছের যদি এই দশা হত তা হলে বামুনঠাকুরের হাতে পায়ে ধরত তাকে একবার তপ্ত তেলে এপিঠ ওপিঠ ওল্টাতে পাল্টাতে। আহা, যে পিঠখানা হারিয়েছে সেই পিঠে পণ্ডিতমশায়ের কত কিলই খেয়েছি, ইঁট দিয়ে তৈরি খইয়ের মোয়াগুলোর মতো। আজ মনে হয়, উঃ—দাদা, একবার কিলিয়ে দাও খুব করে দমাদম—
বলে আমার কাছে এসে পিঠ দিলে পেতে।
আমি আঁতকে উঠে বললুম, যাও যাও, সরে যাও।
ও বললে, কথাটা শেষ করে নিই। একখানা গা খুঁজে খুঁজে বেড়ালুম গাঁয়ে গাঁয়ে। বেলা তখন তিন পহর। যতই রোদে বেড়াই কিছুতেই রোদে পুড়ে সারা হচ্ছি নে, এই দুঃখটা যখন অসহ্য এমন সময় দেখি, আমাদের পাতুখুড়ো মুচিখোলার বটগাছতলায় গাঁজা খেয়ে শিবনেত্র। মনে হল, তার প্রাণপুরুষটা বিন্দু হয়ে ব্রহ্মতালুর চুড়োয় এসে জোনাক-পোকার মতো মিট্মিট্ করছে। বুঝলুম, হয়েছে সুযোগ। নাকের গর্ত দিয়ে আত্মারামকে ঠেসে চালিয়ে দিলুম তার দেহের মধ্যে, নতুন নাগ্রা জুতোর ভিতরে যেমন করে পা’টা ঠেসে গুঁজতে হয়। সে হাঁপিয়ে উঠে ভাঙা গলায় বলে উঠল, কে তুমি বাবা, ভিতরে জায়গা হবে না।