Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)


নবীন- প্রথম পর্ব,২
নবীন

মন্দাকিনীর ধারা

উষার শুকতারা,

কনকচাঁপা কানে কানে যে সুর পেল শিক্ষা।

তোমার সুরে ভরিয়ে নিয়ে চিত্ত

যাব যেথায় বেসুর বাজে নিত্য।

কোলাহলের বেগে

ঘূর্ণি উঠে জেগে,

নিয়ো তুমি আমার বীণার সেইখানেই পরীক্ষা।

 

—

 

তুমি সুন্দর যৌবনঘন,

রসময় তব মূর্তি,

দৈন্যভরণ বৈভব তব

অপচয়পরিপূর্তি।

নৃত্য গীত কাব্য ছন্দ

কলগুঞ্জন বর্ণ গন্ধ

মরণহীন চিরনবীন

তব মহিমাস্ফূর্তি॥

ও দিকে আধুনিক আমলের বারোয়ারির দল বলছে, উৎসবে নতুন কিছু চাই। কোণা-কাটা ত্যাড়াবাঁকা দুম্‌দাম-করা কড়া-ফ্যাশানের আহেলা বেলাতি নতুনকে না হলে তাদের শুকনো মেজাজে জোর পৌঁচচ্ছে না। কিন্তু, যাঁদের রসবেদনা আছে তাঁরা কানে কানে বলে গেলেন, আমরা নতুন চাই নে, আমরা চাই নবীনকে। এঁরা বলেন, মাধবী বছরে বছরে বাঁকা করে খোঁচা মেরে সাজ বদলায় না, অশোক পলাশ একই পুরাতন রঙে নিঃসংকোচে বারে বারে রঙিন। চিরপুরাতনী ধরণী চিরপুরাতন নবীনের দিকে তাকিয়ে বলছে, ‘ লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখনু তবু হিয়া জুড়ন না গেল! ' সেই নিত্যনন্দিত সহজশোভন নবীনের উদ্দেশে তোমাদের আত্মনিবেদনের গান শুরু করে দাও।

 

আন্‌ গো তোরা কার কী আছে,

দেবার হাওয়া বইল দিকে দিগন্তরে —

এই সুসময় ফুরায় পাছে।

কুঞ্জবনের অঞ্জলি যে ছাপিয়ে পড়ে,

পলাশকানন ধৈর্য হারায় রঙের ঝড়ে,

বেণুর শাখা তালে মাতাল পাতার নাচে।

 

প্রজাপতি রঙ ভাসালো নীলাম্বরে,