ছুরি দেখাইয়া
তোমার আদেশ-স্মৃতি অন্তরে বাহিরে
হতেছে শাণিত। আরো কী আদেশ আছে
প্রভু!
রঘুপতি। দূর করে দাও ওই বালিকারে
মন্দির হইতে।– মায়াবিনী, জানি আমি
তোদের কুহক।– দূর করে দাও ওরে!
জয়সিংহ। দূর করে দিব? দরিদ্র আমারি মতো
মন্দির-আশ্রিত, আমারি মতন হায়
সঙ্গীহীন, অকণ্টক পুষ্পের মতন
নির্দোষ নিষ্পাপ শুভ্র সুন্দর সরল
সুকোমল বেদনাকাতর, দূর করে
দিতে হবে ওরে? তাই দিব গুরুদেব!
চলে যা অপর্ণা! দয়ামায়া স্নেহপ্রেম
সব মিছে! মরে যা অপর্ণা! সংসারের
বাহিরেতে কিছুই না থাকে যদি, আছে
তবু দয়াময় মৃত্যু। চলে যা অপর্ণা!
অপর্ণা। তুমি চলে এসো জয়সিংহ, এ মন্দির
ছেড়ে, দুইজনে চলে যাই।
জয়সিংহ। দুইজনে
চলে যাই! এ তো স্বপ্ন নয়। একবার
স্বপ্নে মনে করেছিনু স্বপ্ন এ জগৎ।
তাই হেসেছিনু সুখে, গান গেয়েছিনু।
কিন্তু সত্য এ যে। বোলো না সুখের কথা
আর, দেখায়ো না স্বাধীনতা-প্রলোভন —
বন্দী আমি সত্য-কারাগারে।
রঘুপতি। জয়সিংহ
কাল নাই মিষ্ট আলাপের। দূর করে
দাও ওই বালিকারে।
জয়সিংহ। চলে যা অপর্ণা!
অপর্ণা। কেন যাব!