প্রহরীর প্রবেশ
প্রহরী। বিপক্ষশিবির হতে পত্র আসিয়াছে।
গোবিন্দমাণিক্য। নক্ষত্রের হস্তলিপি। শান্তির সংবাদ
হবে বুঝি।– এই কি স্নেহের সম্ভাষণ!
এ তো নহে নক্ষত্রের ভাষা! চাহে মোর
নির্বাসন, নতুবা ভাসাবে রক্তস্রোতে
সোনার ত্রিপুরা — দগ্ধ করে দিবে দেশ,
বন্দী হবে মোগলের অন্তঃপুরতরে
ত্রিপুররমণী? — দেখি, দেখি, এই বটে
তারি লিপি। ‘ মহারাজ নক্ষত্রমাণিক্য! '
মহারাজ! দেখো সেনাপতি — এই দেখো
রাজদণ্ডে-নির্বাসিত দিয়েছে রাজারে
নির্বাসন দণ্ড। এমনি বিধির খেলা!
নয়নরায়। নির্বাসন! এ কী স্পর্ধা! এখনো তো যুদ্ধ
শেষ হয় নাই।
গোবিন্দমাণিক্য। এ তো নহে মোগলের
দল। ত্রিপুরার রাজপুত্র রাজা হতে
করিয়াছে সাধ, তার তরে যুদ্ধ কেন?
নয়নরায়। রাজ্যের মঙ্গল —
গোবিন্দমাণিক্য। রাজ্যের মঙ্গল হবে?
দাঁড়াইয়া মুখোমুখি দুই ভাই হানে
ভ্রাতৃবক্ষ লক্ষ্য করে মৃত্যুমুখী ছুরি,
রাজ্যের মঙ্গল হবে তাহে? রাজ্যে শুধু
সিংহাসন আছে — গৃহসেথর ঘর নেই,
ভাই নেই, ভ্রাতৃত্ববন্ধন নেই হেথা?
দেখি দেখি আরবার — এ কি তার লিপি?
নক্ষত্রের নিজের রচনা নহে। আমি
দস্যু, আমি দেবদ্বেষী, আমি অবিচারী,
এ রাজ্যের অকল্যাণ আমি! নহে, নহে,
এ তার রচনা নহে।– রচনা যাহারই
হোক, অক্ষর তো তারি বটে। নিজ হস্তে