সুভদ্র। পঞ্চকদাদা, তোমার কী হল?
পঞ্চক। তিন দিনের দিন যে সাপটা এসে আমাকে নিশ্চয় কামড়াবে কথা ছিল, সে আজ পর্যন্ত আমাকে খুঁজে বের করতে পারে নি।
প্রথম। কিন্তু ভয়ানক পাপ করেছ তুমি।
দ্বিতীয়। মহাময়ূরী দেবী ভয়ানক রাগ করেছেন।
পঞ্চক। তার রাগটা কী রকম সেইটে দেখবার জন্যেই তো এ কাজ করেছি!
সুভদ্র। কিন্তু পঞ্চকদাদা, যদি তোমাকে সাপে কামড়াত!
পঞ্চক। তা হলে মাথা থেকে পা পর্যন্ত কোথাও কোনো সন্দেহ থাকত না— ভাই সুভদ্র, জানলা খুলে তুই কী দেখলি বল দেখি।
দ্বিতীয়। না না, বলিস নে।
তৃতীয়। না, সে আমরা শুনতে পারব না – কী ভয়ানক!
প্রথম। আচ্ছা, একটু –খুব একটুখানি বল ভাই।
সুভদ্র। আমি দেখলুম সেখানে পাহাড়, গোরু চরছে –
বালকগণ। (কানে আঙুল দিয়া) ও বাবা, না না, আর শুনব না। আর বলো না সুভদ্র। ঐ যে উপাধ্যায়মশায় আসছেন। চল চল— আর না।
পঞ্চক। কেন? এখন তোমাদের কী?
প্রথম। বেশ, তাও জান না বুঝি? আজ যে পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র—
পঞ্চক। তাতে কী?
দ্বিতীয়। আজ কাকিনী সরোবরের নৈর্ঋত কোণে ঢোঁড়া সাপের খোলস খুঁজতে হবে না?
পঞ্চক। কেন রে?
প্রথম। তুমি কিছু জান না পঞ্চকদাদা। সেই খোলস কালো রঙের ঘোড়ার লেজের সাতগাছি চুল দিয়ে বেঁধে পুড়িয়ে ধোঁয়া করতে হবে যে।
দ্বিতীয়। আজ যে পিতৃপুরুষেরা সেই ধোঁয়া ঘ্রাণ করতে আসবেন।
পঞ্চক। তাতে তাঁদের কষ্ট হবে না?
প্রথম। পুণ্য হবে যে, ভয়ানক পুণ্য।
সুভদ্র। উপাধ্যায়মশায়!
পঞ্চক। আরে পালা পালা। উপাধ্যায়মশায়ের কাছ থেকে একটু পরমার্থতত্ত্ব শুনতে হবে, এখন বিরক্ত করিস নে, একেবারে দৌড়ে পালা।
উপাধ্যায়। কী সুভদ্র, তোমার বক্তব্য কী শীঘ্র বলে যাও।