অবশেষে একদা আশ্বিনে
পুজোর ছুটির দিনে
মনের মতো বাড়ি দেখে
দুই ভাইয়েতে মাকে নিয়ে তীর্থে এল রেখে।
বছরখানেক না পেরোতেই শ্রাবণমাসের শেষে
হঠাৎ কখন মা ফিরলেন দেশে।
বাড়িসুদ্ধ অবাক সবাই — মা বললেন, “ তোরা আমার ছেলে
তোদের এমন বুদ্ধি হল, অপূর্বকে পুরতে দিবি জেলে?”
কানাই বললে, “ তোমার ছেলে বলেই
তোমার অপমানের জ্বালা মনের মধ্যে নিত্য আছে জ্বলেই।
মিথ্যে চুরির দাগা দিয়ে সবার চোখের ‘ পরে
আমার মাকে ঘরের বাহির করে
সেই কথাটা এ জীবনে ভুলি যদি তবে
মহাপাতক হবে। ”
মা বললেন, “ ভুলবি কেন ; মনে যদি থাকে তাহার তাপ
তাহলে কি তেমন ভীষণ অপমানের চাপ
চাপানো যায় আর কাহারো ‘ পরে
বাইরে কিংবা ঘরে।
মনে কি নেই সেদিন যখন দেউ ড়ি দিয়ে
বেরিয়ে এলেম তোদের দুটি সঙ্গে নিয়ে
তখন আমার মনে হল যদি আমি স্বপ্নমাত্র হই
জেগে দেখি আমি যদি কোথাও কিছু নই
তা হলে হয় ভালো।
মনে হল শত্রু আমার আকাশভরা আলো,
দেবতা আমার শত্রু, আমার শত্রু বসুন্ধরা —
মাটির ডালি আমার অসীম লজ্জা দিয়ে ভরা।
তাইতো বলি বিশ্বজোড়া সে লাঞ্ছনা
তেমন করে পায় না যেন কোনো জনা
বিধির কাছে এই করি প্রার্থনা। ”
ব্যাপারটা কী ঘটেছিল অল্প লোকেই জানে,
বলে রাখি সেকথা এইখানে।