পঞ্চক। সুভদ্র, আয় ভাই, প্রায়শ্চিত্ত করতে যাই –আমিও যাব তোর সঙ্গে।
আচার্য। বৎস, আমিও যাব।
সুভদ্র। না না, আমাকে যে একলা থাকতে হবে –লোক থাকলে যে পাপ হবে।
মহাপঞ্চক। ধন্য শিশু, তুমি তোমার ওই প্রাচীন আচার্যকে আজ শিক্ষা দিলে! এস তুমি আমার সঙ্গে।
আচার্য। না, আমি যতক্ষণ তোমাদের আচার্য আছি ততক্ষণ আমার আদেশ ব্যতীত কোনো ব্রত আরম্ভ বা শেষ হতেই পারে না। আমি নিষেধ করছি। সুভদ্র, আচার্যের কথা অমান্য করো না —এস পঞ্চক, ওকে কোলে করে নিয়ে এস।
মহাপঞ্চক। ধিক! তোমাদের মতো ভীরুদের দুর্গতি হতে রক্ষা করে এমন সাধ্য কারও নেই। তোমরা নিজেও মরবে, অন্য সকলকেও মারবে।
পদাতিক। স্থবিরপত্তনের রাজা আসছেন।
মহাপঞ্চক। ব্যাপারখানা কী! এ-যে আমাদের রাজা মন্থরগুপ্ত!
রাজা। নরদেবগণ, তোমাদের সকলকে নমস্কার।
সকলে। জয়োস্তু রাজন্।
মহাপঞ্চক। কুশল তো?
রাজা। অত্যন্ত মন্দ সংবাদ। প্রত্যন্তদেশের দূতেরা এসে খবর দিল যে, দাদাঠাকুরের দল এসে আমাদের রাজ্যসীমার কাছে বাসা বেঁধেছে।
মহাপঞ্চক। দাদাঠাকুরের দল কারা?
রাজা। ঐ-যে যূনকরা।
মহাপঞ্চক। যূনকরা যদি একবার আমাদের প্রাচীর ভাঙে তা হলে যে সমস্ত লণ্ডভণ্ড করে দেবে!
রাজা। সেই জন্যেই তো ছুটে এলুম। চণ্ডক বলে একজন যূনক আমাদের স্থবিরক সম্প্রদায়ের মন্ত্র পাবার জন্যে গোপনে তপস্যা করছিল। আমি সংবাদ পেয়েই তার শিরশ্ছেদ করেছি।
মহাপঞ্চক। ভালোই করেছেন। কিন্তু এদিকে আমাদের অচলায়তনের মধ্যেই যে পাপ প্রবেশ করেছে তার কী করলেন? আমাদের পরাভবের আর দেরি কী?
রাজা। সে কী কথা!
সঞ্জীব। আয়তনে একজটা দেবীর শাপ লেগেছে।
রাজা। একজটা দেবীর শাপ! সর্বনাশ! কেন তাঁর শাপ?
মহাপঞ্চক। যে উত্তর দিকে তাঁর অধিষ্ঠান এখানে একদিন সেই দিককার জানালা খোলা হয়েছে।