কাননপথে কলস লয়ে চলিত যবে নাগরী
কুসুমশর মারিতে গোপনে,
যমুনাকূলে মনের ভুলে ভাসায়ে দিয়ে গাগরি
রহিত চাহি আকুল নয়নে।
বাহিয়া তব কুসুমতরী সমুখে আসি হাসিতে,
শরমে বালা উঠিত জাগিয়া—
শাসনতরে বাঁকায়ে ভুরু নামিয়া জলরাশিতে
মারিত জল হাসিয়া রাগিয়া।
তেমনি আজো উদিছে বিধু, মাতিছে মধুযামিনী,
মাধবীলতা মুদিছে মুকুলে—
বকুলতলে বাঁধিছে চুল একেলা বসি কামিনী
মলয়ানীল-শিথিল-দুকূলে।
বিজন নদীপুলিনে আজো ডাকিছে চখা চখীরে,
মাঝেতে বহে বিরহবাহিনী।
গোপনব্যথা-কাতরা বালা বিরলে ডাকি সখীরে
কাঁদিয়া কহে করুণ কাহিনী।
এসো গো আজি অঙ্গ ধরি সঙ্গ করি সখারে,
বন্যমালা জড়ায়ে অলকে—
এসো গোপনে মৃদুচরণে বাসরগৃহদুয়ারে
স্তিমিতশিখা প্রদীপ-আলোকে।
এসো চতুর মধুর হাসি তড়িৎসম সহসা
চকিত করো বধূরে হরষে—
নবীন করো মানবঘর, ধরণী করো বিবশা
দেবতাপদ-সরস-পরশে।