Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
ছড়ার ছবি - মাকাল,১
মাকাল
গৌরবর্ণ নধর দেহ, নাম শ্রীযুক্ত রাখাল,
জন্ম তাহার হয়েছিল, সেই যে-বছর আকাল।
গুরুমশায় বলেন তারে,
“ বুদ্ধি যে নেই একেবারে;
দ্বিতীয়ভাগ করতে সারা ছ ' মাস ধরে নাকাল। ”
রেগেমেগে বলেন, “ বাঁদর, নাম দিনু তোর মাকাল। ”
নামটা শুনে ভাবলে প্রথম বাঁকিয়ে যুগল ভুরু ;
তারপর সে বাড়ি এসে নৃত্য করলে শুরু।
হঠাৎ ছেলের মাতন দেখি
সবাই তাকে শুধায়, এ কী!
সকলকে সে জানিয়ে দিল, নাম দিয়েছেন গুরু —
নতুন নামের উৎসাহে তার বক্ষ দুরুদুরু।
কোলের ‘ পরে বসিয়ে দাদা বললে কানে-কানে,
“ গুরুমশায় গাল দিয়েছেন, বুঝিসনে তার মানে! ”
রাখাল বলে, “ কখ্খোনো না,
মা যে আমায় বলেন সোনা,
সেটা তো গাল নয় সে কথা পাড়ার সবাই জানে।
আচ্ছা, তোমায় দেখিয়ে দেব, চলো তো ঐখানে। ”
টেনে নিয়ে গেল তাকে পুকুরপাড়ের কাছে,
বেড়ার ‘ পরে লতায় যেথা মাকাল ফ ' লে আছে।
বললে, “ দাদা সত্যি বোলো,
সোনার চেয়ে মন্দ হল?
তুমি শেষে বলতে কি চাও, গাল ফলেছে গাছে। ”
“ মাকাল আমি ” ব ' লে রাখাল দু হাত তুলে নাচে।
দোয়াত কলম নিয়ে ছোটে, খেলতে নাহি চায়,
লেখাপড়ায় মন দেখে মা অবাক হয়ে যায়।
জন্ম তাহার হয়েছিল, সেই যে-বছর আকাল।
গুরুমশায় বলেন তারে,
“ বুদ্ধি যে নেই একেবারে;
দ্বিতীয়ভাগ করতে সারা ছ ' মাস ধরে নাকাল। ”
রেগেমেগে বলেন, “ বাঁদর, নাম দিনু তোর মাকাল। ”
নামটা শুনে ভাবলে প্রথম বাঁকিয়ে যুগল ভুরু ;
তারপর সে বাড়ি এসে নৃত্য করলে শুরু।
হঠাৎ ছেলের মাতন দেখি
সবাই তাকে শুধায়, এ কী!
সকলকে সে জানিয়ে দিল, নাম দিয়েছেন গুরু —
নতুন নামের উৎসাহে তার বক্ষ দুরুদুরু।
কোলের ‘ পরে বসিয়ে দাদা বললে কানে-কানে,
“ গুরুমশায় গাল দিয়েছেন, বুঝিসনে তার মানে! ”
রাখাল বলে, “ কখ্খোনো না,
মা যে আমায় বলেন সোনা,
সেটা তো গাল নয় সে কথা পাড়ার সবাই জানে।
আচ্ছা, তোমায় দেখিয়ে দেব, চলো তো ঐখানে। ”
টেনে নিয়ে গেল তাকে পুকুরপাড়ের কাছে,
বেড়ার ‘ পরে লতায় যেথা মাকাল ফ ' লে আছে।
বললে, “ দাদা সত্যি বোলো,
সোনার চেয়ে মন্দ হল?
তুমি শেষে বলতে কি চাও, গাল ফলেছে গাছে। ”
“ মাকাল আমি ” ব ' লে রাখাল দু হাত তুলে নাচে।
দোয়াত কলম নিয়ে ছোটে, খেলতে নাহি চায়,
লেখাপড়ায় মন দেখে মা অবাক হয়ে যায়।