করুণাময়, মাগি শরণ—
দুর্গতিভয় করহ হরণ,
দাও দুঃখবন্ধতরণ
মুক্তির পরিচয়।
মহাশান্তি মহাক্ষেম
মহাপুণ্য মহাপ্রেম!
প্রথম কিংকরী। রাজকুমারী, আমাদর প্রাসাদের কাজে বিলম্ব হচ্ছে।
রত্নাবলী। আর একটু অপেক্ষা করো। মহারানী লোকেশ্বরী স্বয়ং এসে দেখতে চান। তিনি না এলে নাচ আরম্ভ হতে পারে না।
দ্বিতীয় কিংকরী। আপনার আদেশে এসেছি। কিন্তু অধর্মের ভয়ে মন ব্যাকুল।
তৃতীয় কিংকরী। এইখানেই প্রভুকে পূজা দিয়েছি, আজ এখানেই নটীর নাচ দেখা। ছি ছি, কেমন করে এ পাপের ক্ষালন হবে?
চতুর্থ কিংকরী। এতবড়ো বীভৎস ব্যাপার এখানে হবে জানতেম না। থাকতে পারব না আমরা, কিছুতে না।
রত্নাবলী। মন্দভাগিনী তোরা শুনিসনি, বুদ্ধের পূজা এ-রাজ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে।
চতুর্থ কিংকরী। রাজাকে অমান্য করা আমাদের সাধ্য নেই। ভগবানের পূজা নাই করলেম কিন্তু তাই বলে তাঁর অপমান করতে পারি নে।
প্রথম কিংকরী। রাজবাড়ীর নটীর নাচ রাজকন্যা রাজবধূদেরই জন্যে। এ সভায় আমাদের কেন? চলো তোমরা, আমাদের যেখানে স্থান সেখানে যাই।
রত্নাবলী। (রক্ষিণীদের প্রতি) যেতে দিয়ো না ওদের। এইবার শীঘ্র নটীকে ডেকে নিয়ে এসো।
প্রথম কিংকরী। রাজকুমারী, এ পাপ নটীকে স্পর্শ করবে না। এ পাপ তোমারই।
রত্নাবলী। তোরা ভাবিস তোদের নতুন ধর্মের নতুন-গড়া পাপকে আমি গ্রাহ্য করি।
দ্বিতীয় কিংকরী। মানুষের ভক্তিকে অপমান করা এ তো চিরকালের পাপ।
রত্নাবলী। এই নটীসাধ্বীর হাওয়া তোমাদের সবাইকে লাগল দেখছি। আমাকে পাপের ভয় দেখিয়ো না, আমি শিশু নই।
রক্ষিণী। (প্রথম কিংকরীর প্রতি) বসুমতী, আমরা শ্রীমতীকে ভক্তি করেছি কিন্তু ভুল করেছি তো। সে তো নাচতে রাজি হল।
রত্নাবলী। রাজি হবে না! রাজার আদেশকে ভয় করবে না!
রক্ষিণী। ভয় তো আমরাই করি, কিন্তু—
রত্নাবলী। নটীর পদ কি তোমাদেরও উপরে?