প্রথম কিংকরী। আমরা তো ওকে নটী বলে আর ভাবতুম না। আমরা ওর মধ্যে স্বর্গের আলো দেখেছি।
রত্নাবলী। নটী স্বর্গে গিয়েও নাচে তা জানিস নে!
রক্ষিণী। শ্রীমতীকে পাছে রাজার আদেশে আঘাত করতে হয় এই ভয় ছিল কিন্তু আজ মনে হচ্ছে রাজার আদেশের অপেক্ষা করবার দরকার নেই।
প্রথম কিংকরী। ও পাপীয়সীদের কথা থাক্। কিন্তু এই পাপদৃশ্যে দুই চোখকে কলঙ্কিত করলে আমাদের গতি হবে কী!
রত্নাবলী। এখনো নটীর সাজ শেষ হল না। দেখছ তো তোমাদের নটীসাধ্বীর সাজের আনন্দ কত।
প্রথম কিংকরী। ঐ যে এল! ইস, দেখেছিস ঝলমল করছে।
দ্বিতীয় কিংকরী। পাপদেহে একশো বাতির আলো জ্বালিয়েছে।
প্রথম কিংকরী। পাপিষ্ঠা! শ্রীমতী! ভগবানের আসনের সম্মুখে নির্লজ্জ, তুই আজ নাচবি! তোর দুখানা পা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল না এখনো!
শ্রীমতী। উপায় নেই, আদেশ আছে।
দ্বিতীয় কিংকরী। নরকে গিয়ে শতলক্ষ বৎসর ধরে জ্বলন্ত অঙ্গারের উপরে তোকে দিনরাত নাচতে হবে এ আমি বলে দিলেম।
তৃতীয় কিংকরী। দেখো একবার!পাতকিনী আপাদমস্তক অলংকার পরেছে। প্রত্যেক অলংকারটি আগুনের বেড়ি হয়ে তোর হাড়ে মাংসে জড়িয়ে থাকবে, তোর নাড়ীতে নাড়ীতে জ্বালার স্রোত বইয়ে দেবে তা জানিস?
মল্লিকা। (জনান্তিকে, রত্নাবলীকে) রাজ্যে বুদ্ধপূজার যে-নিষেধ প্রচার হয়েছিল সে আবার ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পথে পথে দুন্দুভি বাজিয়ে তাই ঘোষণা চলছে। হয়তো এখনই এখানেও আসবে তাই সংবাদ দিয়ে গেলেম। আরো একটি সংবাদ আছে। আজ মহারাজ অজাতশ্রত্রু স্বয়ং এখানে এসে পূজা করবেন তার জন্যে প্রস্তুত হচ্ছেন।
রত্নাবলী। একবার দৌড়ে যাও তাহলে মল্লিকা—শীঘ্র মহারানী লোকেশ্বরীকে ডেকে নিয়ে এস।
মল্লিকা। ওই যে তিনি আসছেন।
রত্নাবলী। মহারানী, এই আপনার আসন।
লোকেশ্বরী। থামো। শ্রীমতীর সঙ্গে নিভৃতে আমার কথা আছে। (শ্রীমতীকে জনান্তিকে ডাকিয়া লইয়া) শ্রীমতী!
শ্রীমতী। কী মহারানী?
লোকেশ্বরী। এই লও, তোমার জন্যে এনেছি।
শ্রীমতী। কী এনেছেন?
লোকেশ্বরী। অমৃত।
শ্রীমতী। বুঝতে পারছি নে।
লোকেশ্বরী। বিষ। খেয়ে মরো, পরিত্রাণ পাবে।
শ্রীমতী। পরিত্রাণের আর উপায় নেই ভাবছেন?
লোকেশ্বরী। না। রত্নাবলী আগেই গিয়ে রাজার কাছ থেকে তোমার জন্যে নাচার আদেশ আনিয়েছে। সে আদেশ কিছুতেই