Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://xn--u5bxfcqewdax4kraj7ob.xn--45brj9c)
নটীর পূজা - চতুর্থ অঙ্ক, ৩৩
নটীর পূজা
ফিরবে না জানি।
রত্নাবলী। মহারানী, আর সময় নেই, নৃত্য আরম্ভ হোক।
লোকেশ্বরী। এই নে, শীঘ্র খেয়ে ফেল। এখানে মলে স্বর্গ পাবি, এখানে নাচলে যাবি অবীচি নরকে।
শ্রীমতী। সর্বাগ্রে আদেশ পালন করে নিই।
লোকেশ্বরী। নাচবি?
শ্রীমতী। হাঁ, নাচব।
লোকেশ্বরী। ভয় নেই তোর?
শ্রীমতী। না, কিছু না।
লোকেশ্বরী। তবে তোমাকে কেউ উদ্ধার করতে পারবে না।
শ্রীমতী। যিনি উদ্ধারকর্তা তিনি ছাড়া।
রত্নাবলী। মহারানী, আর একমুহূর্ত দেরি চলবে না। বাইরে গোলমাল শুনছ না? হয়তো বিদ্রোহীরা এখনই রাজোদ্যানে ঢুকে পড়বে। নটী, নাচ শুরু হোক।
শ্রীমতীর গান ও নাচ
আমায় ক্ষমো হে ক্ষমো, নমো হে নমো
তোমায় স্মরি, হে নিরুপম,
নৃত্যরসে চিত্ত মম
উছল হয়ে বাজে।
আমার সকল দেহের আকুল রবে
মন্ত্র হারা তোমার স্তবে
ডাহিনে বামে ছন্দ নামে
নব জনমের মাঝে।
তোমার বন্দনা মোর ভগ্নিতে আজ
সংগীতে বিরাজে।
তোমায় স্মরি, হে নিরুপম,
নৃত্যরসে চিত্ত মম
উছল হয়ে বাজে।
আমার সকল দেহের আকুল রবে
মন্ত্র হারা তোমার স্তবে
ডাহিনে বামে ছন্দ নামে
নব জনমের মাঝে।
তোমার বন্দনা মোর ভগ্নিতে আজ
সংগীতে বিরাজে।
রত্নাবলী। এ কী রকম নাচ! এ তো নাচের ভান। আর এই গানের অর্থ কী!
লোকেশ্বরী। না না বাধা দিয়ো না।
লোকেশ্বরী। না না বাধা দিয়ো না।
শ্রীমতী গান ও নাচ
এ কী পরম ব্যথায় পরান কাঁপায়
কাঁপন বক্ষে লাগে
শান্তিসাগরে ঢেউ খেলে যায়
সুন্দর তায় জাগে।
আমার সব চেতনা সব বেদনা
কাঁপন বক্ষে লাগে
শান্তিসাগরে ঢেউ খেলে যায়
সুন্দর তায় জাগে।
আমার সব চেতনা সব বেদনা