তোমার পায়ে মোর সাধনা
মরে না যেন লাজে।
তোমার বন্দনা মোর ভঙ্গিতে আজ
সংগীতে বিরাজে।
রত্নাবলী। এ কী হচ্ছে! গয়নাগুলো একে একে তালে তালে ওই স্তূপের আবর্জনার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে! ওই গেল কঙ্কণ, ওই গেল কেয়ূর, ওই গেল হার! মহারানী, দেখছেন এ সমস্ত রাজবাড়ির অলংকার— এ কী অপমান! শ্রীমতী, এ আমার নিজের গায়ের অলংকার। কুড়িয়ে নিয়ে এসে মাথায় ঠেকাও, যাও এখনই।
লোকেশ্বরী। শান্ত হও, শান্ত হও। ওর দোষ নেই, এমনি করে আভরণ ফেলে দেওয়া, এই নাচের এই তো অঙ্গ। আনন্দে আমারও শরীর দুলে উঠেছে। (গলা হইতে হার খুলিয়া ফেলিয়া) শ্রীমতী, থেমো না, থেমো না।
মেলে নি মোরে ফল।
কলস মম শূন্যসম
ভরি নি তীর্থজল।
আমার তনু তনুতে বাঁধনহারা
হৃদয় ঢালে অধরাধারা,
তোমার চরণে হক তা সারা,
পূজার পুণ্য কাজে।
তোমার বন্দনা মোর ভঙ্গিতে আজ
সংগীতে বিরাজে।
রত্নাবলী। এ কী রকম নাচের বিড়ম্বনা! নটীর বেশ একে একে ফেলে দিলে। দেখছ তো মহারানী, ভিতরে ভিক্ষুণীর পীতবস্ত্র। একেই কি পূজা বলে না? রক্ষিণী, তোমরা দেখছ। মহারাজ কী দণ্ড বিধান করেছেন মনে নেই?
রক্ষিণী। শ্রীমতী তো পূজার মন্ত্র পড়ে নি।
শ্রীমতী। (জানু পাতিয়া) বুদ্ধং সরণং গচ্ছামি—
রক্ষিণী। (শ্রীমতীর মুখে হাত দিয়া) থাম্ থাম্ দুঃসাহসিকা, এখনো থাম্।
রত্নাবলী। রাজার আদেশ পালন করো।
শ্রীমতী।
ধম্মং সরণং গচ্ছামি—