আজ আর চেনা যাবে না সেই ছেলেকে—
না দেহে, না মনে, না অবস্থায়।
কিন্তু চিরদিন দাঁড়িয়ে আছে যেই আত্মসমাহিত তেঁতুল গাছ
মানবভাগ্যের ওঠানামার প্রতি
ভ্রূক্ষেপ না ক'রে।
মনে আছে একদিনের কথা।
রাত্রি থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি ;
ভোরের বেলায় আকাশের রঙ
যেন পাগলের চোখের তারা।
দিক্হারানো ঝড় বইছে এলোমেলো,
বিশ্বজোড়া অদৃশ্য খাঁচায় মহাকায় পাখি
চার দিকে ঝাপট মারছে পাখা।
রাস্তায় দাঁড়ালো জল,
আঙিনা গেছে ভেসে।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছি,
ক্রুদ্ধ মুনির মতো ওই গাছ মাথা তুলেছে আকাশে,
তার শাখায় শাখায় ভর্ৎসনা।
গলির দুই ধারে কোঠাবাড়িগুলো হতবুদ্ধির মতো,
আকাশের অত্যাচারে
প্রতিবাদ করবার ভাষা নেই তাদের।
একমাত্র ওই গাছটার পত্রপুঞ্জের আন্দোলনে
আছে বিদ্রোহের বাণী,
আছে স্পর্ধিত অভিসম্পাত।
অন্তহীন ইঁটকাঠের মূক জড়তার মধ্যে
ওই ছিল একা মহারণ্যের প্রতিনিধি—
সেদিন দেখেছি তার বিক্ষুব্ধ মহিমা বৃষ্টিপাণ্ডুর দিগন্তে।
কিন্তু যখন বসন্তের পর বসন্ত এসেছে,
অশোক বকুল পেয়েছে সম্মান ;
ওকে জেনেছি যেন ঋতুরাজের বাহির - দেউড়ির দ্বারী,
উদাসীন, উদ্ধত।
সেদিন কে জেনেছিল—