সুরঙ্গমা। কৌতূহলের জিনিস হাজার হাজার আছে— তুমি কি তাদের সঙ্গে মিলে কৌতূহল মেটাবে। তুমি আমার তেমন রাজা নও। রানী, তোমার কৌতূহলকে শেষকালে কেঁদে ফিরে আসতে হবে।
কোথা বাইরে দূরে যায় রে উড়ে হায় রে হায়,
তোমার চপল আঁখি বনের পাখি বনে পালায়।
আজি হৃদয়মাঝে যদি গো বাজে প্রেমের বাঁশি
তবে আপনি সেধে আপনা বেঁধে পরে সে ফাঁসি,
তবে ঘুচে গো ত্বরা ঘুরিয়া মরা হেথা হোথায়—
আহা, আজি সে আঁখি বনের পাখি বনে পালায়।
চেয়ে দেখিস না রে হৃদয়দ্বারে কে আসে যায়।
তোরা শুনিস কানে বারতা আনে দখিনবায়!
আজি ফুলের বাসে সুখের হাসে আকুল গানে
চির- বসন্ত যে তোমারি খোঁজে এসেছে প্রাণে।
তারে বাহিরে খুঁজি ঘুরিয়া বুঝি পাগলপ্রায়—
তোমার চপল আঁখি বনের পাখি বনে পালায়॥
প্রথম পথিক। ওগো মশায়!
প্রহরী। কেন গো।
দ্বিতীয়। রাস্তা কোথায়। আমরা বিদেশী, আমাদের রাস্তা বলে দাও।
প্রহরী। কিসের রাস্তা।
তৃতীয়। ঐ-যে শুনেছি আজ কোথায় উৎসব হবে। কোন্ দিক দিয়ে যাওয়া যাবে।
প্রহরী। এখানে সব রাস্তাই রাস্তা। যে দিক দিয়ে যাবে ঠিক পৌঁছবে। সামনে চলে যাও।
প্রথম। শোনো একবার, কথা শোনো। বলে, সবই এক রাস্তা। তাই যদি হবে তবে এতগুলোর দরকার ছিল কী?
দ্বিতীয়। তা ভাই, রাগ করিস কেন। যে দেশের যেমন ব্যবস্থা! আমাদের দেশে তো রাস্তা নেই বললেই হয়—বাঁকাচোরা গলি, সে তো গোলকধাঁদা। আমাদের রাজা বলে, খোলা রাস্তা না থাকাই ভালো; রাস্তা পেলেই প্রজারা বেরিয়ে চলে যাবে। এ দেশে উলটো, যেতেও কেউ ঠেকায় না, আসতেও কেউ মানা করে না— তবু মানুষও তো ঢের দেখছি—এমন খোলা পেলে আমাদের রাজ্য উজাড় হয়ে যেত!