৪। নিম্নোদ্ধৃত (ক) ও (খ) দুইটি কাব্যাংশের মধ্যে যেটি ইচ্ছা গদ্যে প্রকাশ কর। গদ্য রচনারীতির প্রয়োজনানুসারে কিঞ্চিৎ পরিবর্তন ও নূতন যোজনা অসঙ্গত হইবে না। –
(ক) (কুরুক্ষেত্রে অভিমন্যুর মৃত দেহ)
দেখিলেন কুরুক্ষেত্র শোকের সাগর।
শবচক্র মহাবেলা ; প্রশস্ত
প্রাঙ্গণ ব্যাপিয়া পাণ্ডবসৈন্য, ঊর্মির মতন
উদ্বেলিত মহাশোকে, কাঁদে অধোমুখে,-
গুণহীন ধনু, পৃষ্ঠে শরহীন তূণ।
রথী মহারথিগণ বসিয়া ভূতলে
কাঁদিতেছে অধোমুখে, যেন আভাহীন
সিক্ত রত্নরাজি পড়ি রত্নাকরতলে।
বাণবিদ্ধমীন-মত পাণ্ডব সকল
করিতেছে গড়াগড়ি পড়িয়া ভূতলে।
মূর্চ্ছিত বিরাটপতি ; স্তম্ভিত প্রাঙ্গণ।
কেন্দ্রস্থলে অভিমন্যু, শরের শয্যায়,—
সিদ্ধকাম মহাশিশু! ক্ষত কলেবর
রক্তজবাসমাবৃত ; সস্মিত বদন
মায়ের পবিত্র অঙ্কে করিয়া স্থাপিত,
— সন্ধ্যাকাশে যেন স্থির নক্ষত্র উজ্জ্বল —
নিদ্রা যাইতেছে সুখে। বক্ষে সুলোচনা
মূর্চ্ছিতা ; মূর্চ্ছিতা পদে পড়িয়া উত্তরা,
সহকার-সহ ছিন্না ব্রততীর মত।
কেবল দুইটি নেত্র শুষ্ক, বিস্ফারিত,
এই মহাশোকক্ষেত্রে ; কেবল অচল
এই মহাশোকক্ষেত্রে একটি হৃদয় ;-
সেই নেত্র, সেই বুক, মাতা সুভদ্রার।
চাপি মৃত পুত্রমুখ মায়ের হৃদয়ে
দুই করে, বিস্ফারিত নেত্রে প্রীতিময়,
যোগস্থা জননী চাহি আকাশের পানে,-
আদর্শবীরত্ববক্ষে প্রীতির প্রতিমা!