যাহাদের পক্ষ সমর্থন করিতে আসিল ইহারাও তাহাদেরই দশা প্রাপ্ত হইল। আরও দুইজন দারোয়ান এবং দুইজন কন্ষ্টেবল ঘটনাস্থানে ছুটিয়া আসিল; তাহাদের আগমনের কয়েক সেকেণ্ড্ পরেই দেখা গেল তাহারাও রাস্তার মাঝখানে লুটাইতেছে। জাপানীকে দেখিয়া বোধ হইল যে, তাহার জুজুৎসু খেলা আরো কিছু দেখাইবার জন্য সে প্রস্তুত আছে। শক্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিবার জন্য সে মিষ্ট হাসিমুখে অন্য সকলকে আহ্বান করিতে লাগিল। একজন য়ুরোপীয় সা ন্ট এই সঙ্কটকালে উপস্থিত হইল এবং তাহার সঙ্গে ফাঁড়ি-থানায় যাইতে তাহাকে সবিনয় অনুরোধের দ্বারা রাজি করাইল। গতকল্য রিপোর্টে পাওয়া গিয়াছে যে, তাহাকে সাবধান করিয়া ছাড়িয়া দেওয়া হইয়াছে।
৮৩
একটি হিন্দুরমণীকে মিথ্যা পরিচয়ে বিবাহ করিবার অপরাধে হরিপুরের পুলিস মনোহর পাল-নামক এক ব্যক্তিকে এইমাত্র গ্রেফ্তার করিয়াছে। এইরূপ উক্ত হইয়াছে যে, অভিযুক্ত নিজেকে মথুর গাঙ্গুলীর পুত্র ব্রজ গাঙ্গুলী নামে অভিহিত করিয়াছিল এবং সে মাধব চক্রবর্ত্তী নামে একজনের বাড়িতে বাস করিত। ইহাও বর্ণিত হইয়াছে যে, সে মাধবের বাড়িতে বার্ষিক দুর্গাপূজা করিত। কানাই চাটুজ্জে নামে একজনের কাদম্বিনী বলিয়া এক অবিবাহিত ভগিনী ছিল। মথুরের পুত্রকে এ পর্য্যন্ত খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই এবং রিপোট্র্ দেওয়া হইয়াছিল যে, সে সন্ন্যাসী হইয়া তাহার পিতৃগৃহ ত্যাগ করিয়াছিল। মনোহর ইহাই জানিতে পারিয়া সন্ন্যাসীর মতো চলিতে লাগিল এবং লোককে জানাইল যে, সে’ই মথুরের নিরুদ্দেশ ছেলে। কানাই তাহার সঙ্গে নিজের বোনের বিবাহের বন্দোবস্ত করে এবং চার বৎসর পূর্ব্বে হিন্দুপ্রথামতে বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তি কানাইয়ের কাছে আসিত এবং একটা ব্যবসা করিবে বলিয়া জানাইলে কানাই তাহাকে ৬৫০ টাকা দেয়। তাহার আচারব্যবহার কেমন সন্দেহজনক ছিল; পরে তাহার সত্য নাম ও জাতি প্রকাশ হইয়া পড়িল। কানাইয়ের ভগিনী ইহা জানিতে পারিয়া তাহার ভাইকে বলে যে, তাহাকে উদ্ধার না করিলে সে আত্মহত্যা করিবে। পুলিসকে খবর দেওয়া হইল এবং অভিযুক্ত গ্রেফ্তার হইল। আরও অনুসন্ধান চলিতেছে।
৮৪
ধনুষ্টঙ্কার যে রোগবীজের দ্বারা উৎপন্ন হয় তাহারা ভূমির উপরিভাগে বাস করে; তাহারা বিশেষভাবে এমন ভূমিতলকে পছন্দ করে যেখানে ঘোড়া কিংবা গোরুর পাল বাস করিতেছে, যেমন আস্তাবল রাস্তা এবং গোলাবাড়ী। গোরু এবং ঘোড়ার শরীর হইতে যেসকল ত্যাজ্য পদার্থ নির্গত হইয়াছে তাহা এইসকল রোগবীজের পোষণের পক্ষে বিশেষ উপযোগী বলিয়া বোধ হয়। তাহারা চর্ম্মের কোনো একটা ক্ষুদ্র ক্ষত কিম্বা ঘা দিয়া কিম্বা নাকের কিম্বা মুখের ভিতর দিয়া মানুষের দেহে প্রবেশ করে।
৮৫
সেই জন্য যেসব লোক খালি পায়ে যায়, কিম্বা রাস্তায় পড়িয়া গিয়া যাহাদের ঘা লাগে বা আঁচড় লাগে, বিশেষত সেই রাস্তায় যদি ঘোড়া কিংবা গোরুর যাতায়াত থাকে, তবে ধনুষ্টঙ্কারের দ্বারা আক্রান্ত হইবার সম্ভাবনা অন্য লোকদের চেয়ে ইহাদের অধিক। যখন ভূতলের উপরিভাগ শুকাইয়া যায় এবং মলিন পদার্থ উড়িয়া বেড়ায়, তখন বাতাসে ভাসমান ধূলি নাক মুখ বা কণ্ঠের মধ্যে কিছু পরিমাণ এই রোগবীজ বহন করিয়া আনিতে পারে। আর যদি সেখানে কোনো ক্ষুদ্র ক্ষত থাকে তবে ইহা রক্তে প্রবেশ করিয়া ধনুষ্টঙ্কার ঘটাইতে পারে।
৮৬
এই Madam Orange এর; তিনি অপেক্ষাকৃত দরিদ্রশ্রেণীর বৃদ্ধা ফরাসী স্ত্রীলোকের খাঁটি নিদর্শন; তাঁহার স্বামী যুদ্ধক্ষেত্রের পুরঃসীমায় আছেন। প্রফুল্লভাবে স্বেচ্ছারত কর্ম্মশীলতায় তিনি বিস্ময়জনক–এবং যদিও তাঁহার অল্পই কাপড় আছে এবং বস্তুত টাকা নাই, এবং না আছে কয়লা, না আছে বাতি, না আছে কেরোসিন, এবং পাঁচ হইতে দশ বছর বয়সের চারিটি ছোটো ছোটো শিশুর